বিটকয়েন কিভাবে কিনবেন ( Bitcoin Kivabe Kinben)

বিটকয়েন কিভাবে কিনবেন ভারতে কিভাবে বিটকয়েন কেনা যায়, বর্তমান বিশ্বে ভারত সহ প্রতিটি দেশে বিটকয়েন এর চাহিদা ক্রমশ বেড়েই চলেছে।

বিটকয়েনের উর্দ্ধমুখী গ্রাফ মানুষের মধ্যে এখন বিটকয়েন একাউন্ট খোলার হিড়িক ফেলে দিয়েছে। বর্তমানে ০১ টি বিটকয়েন সমান ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।

তাই মানুষ এখন বিটকয়েনের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে চড়া দামে বিটকয়েন বিক্রয়ের আশায় কমদামে বিটকয়েন কিনে রাখছে।ভবিষ্যতে বিটকয়েনের মূল্য আরো বাড়ার আশা নিয়ে,মানুষ বিটকয়েন কিনে বিটকয়েন নিয়ে ব্যবসা করতে চাইছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি হিসাবে বিটকয়েন কিভাবে কিনবেন বা ভারতে কিভাবে বিটকয়েন কেনা যায় যারা চিন্তা করছেন, আজকের আর্টিকেলটি তাদের অনেক উপকারে লাগবে।

আমরা এই আর্টিকেলে বিটকয়েন কিভাবে কিনেবেন,ভারতে বিটকয়েন কিনতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে,বিটকয়েন কিভাবে বেচবেন সেই বিষয়ে একটা স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

বিটকয়েন কি (Bitcoin Ki)

বিটকয়েন হল একপ্রকার ডিজিট্যাল অভৌতিক মুদ্রা, যা ২০০৮ সালে সাতোশি নাকামতো ছদ্মনামের একজন ব্যক্তি আবিষ্কার করেন। ২০০৯ সালে ওপেন সোর্স ক্রিপ্টোগ্রাফি সফ্টওয়ার দ্বারা অনলাইন লেনদেনের জন্যে সার্বজনীন লঞ্চ করা হয়।

শুরুর দিকে ০১ টি বিটকয়েন সমান $০.০০৩ ডলার ছিল, কিন্তু আজকে ভারতীয় মুদ্রায় ০১ টি বিটকয়েন সমান ৫০ লক্ষ টাকার বেশি। বিটকয়েনের দিন প্রতিদিন চাহিদা ও উর্দ্ধমুখী দাম বৃদ্ধি দেখে

আপনারা অনুমান করতে পারেন বিটকয়েনের ভবিষ্যতে দাম গিয়ে কত টাকা হবে। তবে বিটকয়েনের কোনো ভৌতিক রূপ নেই, তাই বিটকয়েন আপনি হাতে ছুঁয়ে দেখতে পারবেন না,

বিটকয়েন শুধু লেনদেন করার জন্যে খরচ করা যায়। বিটকয়েন নির্দিষ্ট কোনো দেশের কারেন্সি নয় তাই বিটকয়েনকে নির্দিষ্টভাবে কোনো দেশের কারেন্সি বলা যায়না।

বিটকয়েনের উপর কোনো দেশের কোনো সরকারে নিয়ন্ত্রণ নেই তবে বিটকয়েন দিয়ে এক দেশ থেকে অন্য দেশে অনায়াসে লেনদেন করা যায়, তাই কোনো দেশের কোনো ব্যাঙ্ক বা কোনো সংস্থা বিটকয়েন লেনদেনের কোনো হিসাব রাখেনা।

(আরো পড়ুন : বিটকয়েন মাইনিং কি, বিটকয়েন কিভাবে তৈরী হয়)

বিটকয়েন কিনতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে

বিটকয়েন কিভাবে কিনবেন তো ? বিটকয়েন কেনার জন্যে এবং বিটকয়েন বেচার জন্যে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের দরকার হবে। বিটকয়েন একাউন্ট খোলার জন্যে আপনার যে সমস্ত দরকারি ডকুমেন্ট গুলো লাগবে –

  1. আধার কার্ড
  2. প্যান কার্ড
  3. ভোটার কার্ড
  4. ব্যাঙ্ক একাউন্ট

(আরো পড়ুন : বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম)

(আরো পড়ুন : বিটকয়েন কেনা বেচা কিভাবে করবেন )

বিটকয়েন কিভাবে কিনেবেন

বিটকয়েন কেনাবেচা করার জন্যে সবার প্রথমে আপনার একটি বিটকয়েন ওয়ালেটের দরকার পড়বে। বিটকয়েন ওয়ালেটে আপনি আপনার বিটকয়েন কিনে সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন।

ভারতে বিটকয়েন কেনা ও বেচার অনেক বিটকয়েন ওয়েবসাইট আছে। যেমন- Wazirx,Zebpay,CoinSwitch ইত্যাদি বিটকয়েন ওয়ালেট গুলো জনপ্রিয়তায় সবার শীর্ষে রয়েছে।

কিন্তু এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা ‘Wazirx’ বিটকয়েন ওয়েবসাইটটি হল সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় একটি বিটকয়েন ওয়েবসাইট। তাছাড়া Wazirx বিটকয়েন ওয়ালেটির লে আউট খুব ইউজার ফ্রেন্ডলি যা সবাইকে আকৃষ্ট করে।

(আরো পড়ুন : ভারতে বিটকয়েন কিভাবে কিনবেন)

(আরো পড়ুন : ব্লকচেইন প্রযুক্তি কি)

01. বাজিরক্স (WAZIRX) মোবাইল এপ্লিকেশনা সাইন আপ করুন

বিটকয়েন কিভাবে কিনবেন তার জন্যে চিন্তা করার কারণ নেই। বিটকয়েন একাউন্ট খোলার জন্যে সবার প্রথমে আপনার মোবাইলের গুগুল প্লে স্টোর থেকে কিংবা Wazirx এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইন আপ করতে হবে।

এখানে আপনি আপনার মোবাইল নম্বর বসিয়ে OTP দিয়ে Wazirx একাউন্ট ভেরিফাই করার পর চার ডিজিটের গুপ্ত নম্বর দিয়ে পিন সেট করতে হবে, আর এটাই হবে আপনার Wazirx ওয়ালেটের লগইন করার সিকিউরিটি পিন।

02. KYC ভেরিফিকেশন

Wazirx ওয়ালেটে সাইন আপ হয়ে যাওয়ার পর আপনাকে আপনার বিটকয়েন ওয়ালেটের KYC ভেরিফিকেশন পক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

এখানে KYC ভেরিফিকেশন করার জন্যে আপনার প্যান কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি ডকুমেন্ট গুলোর pdf ফাইলের দরকার হবে। আপনাকে তার জন্যে আগে থেকেই সমস্ত ডকুমেন্ট গুলো স্ক্যান করে রেখে দিতে হবে।

তারপর আপলোড ডকুমেন্টে ক্লিক করে আপনাকে KYC এর জন্যে প্রয়জনীয় ডকুমেন্ট গুলো আপলোড করে দিতে হবে। সচরাচর KYC প্রসেস পুরো করার পর KYC ভেরিফায়ের জন্যে আপনাকে ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হতে পারে।

03. ব্যাঙ্ক একাউন্ট ডিটেলস পূরণ করুন

KYC সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আপনাকে ধাপে ধাপে ব্যাঙ্ক ডিটেলস পূরণ করতে হবে। এখানে আপনাকে ব্যাঙ্ক ডিটেলস টি ভালো করে পূরণ করতে হবে।

আপনার অ্যাড করা ব্যাঙ্কের ডিটেলস অনুযায়ী, আপনি যখন বিটকয়েন বেচবেন আপনার অ্যাড করা একাউন্টে আপনার বিটকয়েনের পয়সা জমা হবে।

এখানে ব্যাঙ্ক একাউন্ট ছাড়াও ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড অথবা Phonepay, Google Pay, Paytm ইত্যাদি অনলাইন ওয়ালেট গুলো দিয়ে বিটকয়েন ওয়ালেটে পয়সা জমা করা যায়।

04. বিটকয়েন কেনার নিয়ম

ধাপে ধাপে পুরো প্রসেস কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনি এবার আপনার বিটকয়েন ওয়েবসাইট ওয়ালেট থেকে বিটকয়েন কিনতে পারেন। বিটকয়েন কেনার জন্যে সবার প্রথমে আপনি আপনার বিটকয়েন ওয়ালেটে সাইন ইন করে নিন।

এখানে বিটকয়েনের ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ডে আপনি বিটকয়েন ভিন্ন আলাদা আলাদা বহু ধরণের ক্রিপ্টোকারেন্সি দেখতে পাবেন। তবে আপনি যদি নির্দিষ্টভাবে বিটকয়েন কিনতে চান তাহলে

আপনার বিটকয়েন ওয়ালেটে বিটকয়েন লিখে সার্চ করুন। তারপর BUY লেখাটির উপর ক্লিক করে বিটকয়েন কেনার প্রসেস পুরো করুন।

বিটকয়েন কিভাবে বেচবেন

এতক্ষন আমরা বিটকয়েন কিভাবে কিনেবেন তা জানলাম, এবারে বিটকয়েন কিভাবে বেচবেন তার জন্যে আপনার নতুন করে চিন্তা করার কিছু নেই।

আপনি আপনার বিটকয়েনের যে ওয়ালেট থেকে বিটকয়েন কিনেছিলেন সেই বিটকয়েন ওয়ালেট থেকে বিটকয়েন বেচতে পারবেন।

আপনি যদি Wazirx বিটকয়েন ওয়েবসাইটটিতে বিটকয়েন কেনার জন্যে খাতা খুলেছিলেন, তাহলে আপনি আপনার Wazirx ওয়ালেটে লগইন করে sell অপশনে ক্লিক করে

এক ক্লিকে আপনার বিটকয়েন গুলো বিক্রি করতে পারেন। বিটকয়েন বেচার ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিটকয়েন একাউন্টে আপনার পয়সা জমা হয়ে যাবে।

বিটকয়েন কেনার ফায়দা

এখন আমাদের জানতে হবে বিটকয়েন কিনে বা বিটকয়েন কিনলে বিটকয়েন কেনার ফায়দা কি হবে –

০১. বর্তমানে অনেক অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট বিটকয়েনের লেনদেন স্বীকার করে, সুতরাং বিটকয়েন দিয়ে কেনাবেচা করা যায়।

০২. বিটকয়েন দিয়ে দেশ ও বিদেশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে অনায়াসে লেনদেন পক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।

০৩. কমদামে বিটকয়েন কিনে রেখে ভবিষ্যতে বিটকয়েনের দাম বাড়লে বিটকয়েন বিক্রি করে মুনাফা কামানো যায়।

০৪. এক ব্যাঙ্ক থেকে অন্য ব্যাঙ্কে, কিংবা ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন করলে ট্রানজেকশন ফিস নেওয়া হয়। কিন্তু বিটকয়েনের লেনদেনে কোনো রকম ফিস দেওয়ার দরকার হয়না।

০৫. বিটকয়েন কোনো ব্যাঙ্ক বা এজেন্সি দ্বারা পরিচালিত হয়না, তাই বিটকয়েনের লেনদেনের উপর কোনো এজেন্সির নিয়ন্ত্রণ থাকেনা।

বিটকয়েন কেনার লোকসান

আমরা এতক্ষণ বিটকয়েন কেনার ফায়দা গুলো জানলাম, এবারে আমরা বিটকয়েন কেনার কিছু লোকসান সম্পর্কে জানব-

০১. বিটকয়েনের উপর কোনো দেশের কোনো সরকারের,ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ নেই সুতারং আপনার বিটকয়েন কোনো কারণে চুরি হয়ে গেলে আপনি কোনো এজেন্সির কাছে বিটকয়েন রিকভারির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

০২. সময়ের সাথে বিটকয়েনের মূল্যের বাড়া কমা হয় তাই বিটকয়েনে নিবেশ একটি ঝুঁকিসম্পূর্ণ নিবেশ পক্রিয়া।

০৩. আপনি যদি কোনো কারণে আপনার বিটকয়েনের একাউন্টের আইডি ও পাসওয়ার্ড ভুলে যান, তাহলে কোনো ভাবেই বিটকয়েন একাউন্টের পাসওয়ার্ড রিকোভারি সম্ভব নয়। যার ফলে আপনার বিটকয়েন লস হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে।

০১ টি বিটকয়েন সমান কত টাকা

বিটকয়েনের দাম মার্কেট স্বাপেক্ষে বাড়ে ও কমে তাই নির্দিষ্টভাবে বিটকয়েনের দাম কখনো স্থির থাকেনা। তবু যদি ০১ টি বিটকয়েন সমান কত টাকা যদি দেখা যায় তাহলে ০১ টি বিটকয়েনের মূল্য উঠে আসবে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা।

বিটকয়েন কিভাবে কিনেবেন
বিটকয়েন কিভাবে কিনেবেন

পরিশিষ্ট

আমরা এতক্ষন ভারতে কিভাবে বিটকয়েন কেনা যায়, বিটকয়েন কিভাবে কিনেবেন,বিটকয়েন কিভাবে বেচবেন আলোচনা সাপেক্ষে কিঞ্চিৎ বর্ণনা করে দেখানোর চেষ্টা করলাম।

তবুও আপনাদের মনে বিটকয়েন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে আরো বেশি জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে আমাদের বিটকয়েনের আরো অন্যান্য আর্টিকেল গুলো পড়ে দেখতে পারেন অথবা আমাদের কমেন্ট করে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।

FAQ

প্রশ্ন – বিটকয়েন কি ?

উঃ – বিটকয়েন হল একপ্রকার অভৌতিক ডিজিটাল কারেন্সি যা হাতে ছোঁয়া বা চোখে দেখা যায়না। তবে বিটকয়েন দিয়ে শুধু অনলাইন লেনদেন করা যায়।

প্রশ্ন- বিটকয়েন কিভাবে তৈরি হয় ?

উঃ- বিটকয়েন মাইনরদের দ্বারা ক্রিপ্টোগ্রাফি পদ্ধতিতে ব্লকচেন টেকনোলজি দ্বারা বিটকয়েন তৈরি হয়।

প্রশ্ন- বিটকয়েন কিভাবে কিনব ?

উঃ- বিটকয়েন কেনার জন্যে বিটকয়েনের ওয়েবসাইট, যেমন- wazirx,zebpay ইত্যাদি বিটকয়েন ওয়েবসাইট গুলোর ওয়ালেটে সাইন আপ করে রেজিস্ট্রেশন করে বিটকয়েন কেনা যায়।

প্রশ্ন- কিভাবে বিটকয়েন আয় করা যায় ?

উঃ কমদামে বিটকয়েন কিনে রাখলে ভবিষতে বিটকয়েনের দাম বাড়লে, বিটকয়েন বিক্রি করে আয় করা যায়।

প্রশ্ন- ০১ বিটকয়েন সমান কত সাতোশি ?

উঃ – ০১ বিটকয়েন সমান ১০ কোটি সাতোশি।

5/5 - (1 vote)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here