মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় (Meyeder Sada Srab Dur Korar Ghoroya Prakitik Upay)

আজকের আর্টিকেলে আমরা মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় (Sada Srab Dur Korar Upay) অথাৎ মেয়েদের সাদা স্রাব এর ঘরোয়া চিকিৎসা কিভাবে করা যায় সেই ব্যাপারে আলোচনা করব।

মেয়েদের ঋতু স্রাব ও সাদা স্রাব হওয়া নিত্যান্ত একটি কমন ব্যাপার, তবে মুশকিলটা তখন হয় যখন কোনো মেয়ে বা মহিলার ঘন ঘন সাদা স্রাব হয় কিংবা অতিরিক্ত সাদা স্রাব হওয়ার জন্যে মহিলাদের লজ্জাস্থানে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।

তখন একজন মেয়ের কাছে তার অতিরিক্ত সাদা স্রাব অস্বস্তির কারণ হওয়ার সাথে,সাথে রোগ জীবাণু দ্বারা গোপনাঙ্গে চুলকানি, ঘা, এর মত ইত্যাদির দ্বারা যৌনরোগে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়।

কিন্তু আমাদের দেশের অনেক মহিলারাই অজ্ঞানতার অভাবে তাদের শরীরের মধ্যে হওয়া এই ধরণের প্রাকৃতিক শারীরিক সমস্যা গুলোকে নিত্যান্ত শারীরিক নগণ্য সমস্যা বলে এড়িয়ে চলে যায়।

কিন্তু কোনো মহিলাকেই তাদের শরীরীরের part of job হিসাবে কখনই মেয়েদের সাদা স্রাব জিনিসটাকে হেলাফেলা করা উচিত নয়। সাদা স্রাবের কারণে যৌনাঙ্গে নানা ধরণের সংক্রমণের মধ্যে দিয়ে নারীরা যৌন রোগের স্বীকার পর্যন্ত হতে পারে।

সাদা স্রাবকে ইংরেজীতে White Discharge বা Vaginal Discharge বলা হয়। এখন আমরা মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় আর্টিকেলটির মধ্যে দিয়ে, মেয়েদের সাদা স্রাব কেন হয়, মেয়েদের সাদা স্রাবের লক্ষণ,

সাদা স্রাব বন্ধ করার সহজ উপায় হিসাবে সাদা স্রাব বন্ধ করার ঔষধ, সাদা স্রাব এর ঘরোয়া চিকিৎসা বা সাদা স্রাব দূর করার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা সমন্ধে প্রাথমিক উপাচাররের জন্য কতগুলো ঘরোয়া টোটকা আপনাদের কাছে আলোচনা করব।

মেয়েদের সাদা স্রাব কি ( Meyeder Sada Srab Ki )

সাদা স্রাব হল মেয়েদের একটি শারীরিবৃত্তীয় পক্রিয়া যেটা প্রাকৃতিক নিয়মে মহিলাদের যৌনিপথ (Vagina) দিয়ে তরলভাবে নিঃসৃত হয়। সাদা স্রাব সাধারণত সাদা রঙের চিটচিটে ও পাতলা ধরণের হয়। তবে স্বাভাবিকভাবে মহিলাদের মধ্যে

সাদা স্রাবের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় সাধারণত মাসিকধর্মের আগে, মানসিক চাপে থাকলে, প্রচন্ড পরিশ্রমের ফলে শরীরের উপর নানান ধরণের ধকল গেলে এবং মেয়েদের শরীরের মধ্যে যৌন উত্তেজনা জাগলে হরমোন জনিত কারণে,

আবার গর্ভকালে সন্তান প্রসব করার কয়েকদিন আগে থেকে মেয়েদের যৌনিপথ দিয়ে সাদা তরল বা সাদা স্রাব নিঃসৃত হয়। এই সমস্ত কারণ গুলোর জন্যে মহিলাদের কোনো কোনো সময় দু-একবার সাদা স্রাব হয় তাহলে, সেটা নিতান্ত স্বাভাবিক একটা বিষয়।

তবে কোনো উপযুক্ত কারণ ছাড়াই যখন তখন অতিরিক্ত পরিমানে কোনো মহিলার যৌনিপথ দিয়ে সাদা স্রাব নিঃসৃত হয় তখন অবশ্যই দেরি না করে ঐ মহিলাকে একজন ভালোমানের বিশেষজ্ঞ গাইনো ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

মেয়েদের সাদা স্রাব দেখতে কেমন হয় (Types of Vaginal Discharge)

অতিরিক্ত সাদা স্রাবের ফলে, স্বাভাবিক কারণ ছাড়াই নারী যৌনাঙ্গ যখন সংক্রমণের স্বীকার হয় তখন, মেয়েদের যৌনাঙ্গে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে সাদা স্রাবের (Vaginal Discharge) রঙ গুলোও পাল্টে যায়। যেমন-

০১. গাঢ় সাদা রঙের সাদা স্রাব : স্বাভাবিক নিয়মে মহিলাদের মাসিক চক্রের আগে যৌনিপথ দিয়ে গাঢ় রঙের সাদা স্রাব (White Discharge) নিঃসৃত হতে দেখতে পাওয়া যায়।

তবে এই ধরণের সাদা স্রাব বা গাঢ় সাদা স্রাব হলে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই , কারণ এটা স্বাভাবিক। তবে যদি সাদা স্রাব হওয়ার সাথে আপনার যৌনি চুলকায় এবং যৌনি পথে

ভ্যাপসা রুটি পচার মত গন্ধ বার হয় তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার যৌনিতে ইষ্ট ইনফেশন হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে আপনাকে অবশ্যই একজন ভালো গাইনো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

০২. সবুজ রঙের সাদা স্রাব : এই ধরণের সবুজ রঙের সাদা স্রাব সব মহিলাদের মধ্যে সচরাচর চোখে পড়েনা। তবে কোনো কোনো সময় পুরুষের যৌনাঙ্গ থেকে মহিলার যৌনাঙ্গে কিংবা মহিলার যৌনাঙ্গ থেকে

পুরুষের যৌনাঙ্গের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ফলে নারী যৌনির মধ্যে সবুজে সাদা স্রাব দেখতে পাওয়া যায়। এই ধরণের সুবজে সাদা স্রাব হওয়ার মুখ্য কারণ হল সংক্রামিত যৌনিতে নারী পুরুষের সহবাস (Intercorse) করা।

এই ধরণের সংক্রমণ নারী পুরুষের সহবাসের ফলে একে অপরের যৌনাঙ্গ থেকে ট্রান্সমিটেড Infection ছড়ায়। এইধরণের ট্রান্সমিটেড যৌন সংক্রমণকে ডাক্তারি ভাষায় Trchomoniasis বলা হয়।

আপনার কিংবা আপনার সেক্স পার্টনারের যৌনাঙ্গে যদি এই ধরণের সংক্রমণ থাকে তাহলে দেরি না করে দুইজন পার্টনারকে একসঙ্গে অবশ্যই বিশিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

০৩. হলুদ রঙের সাদা স্রাব : একটা জিনিস মনে রাখবেন একমাত্র সাদা রঙের সাদা স্রাবই হল মেয়েদের শারীরবৃত্তীয় প্রাকৃতিক নিয়মে হওয়া সাদা স্রাব। বাকি আরো অন্যান্য কারণে যে সমস্ত আলাদা আলাদা রঙের সাদা স্রাব গুলো হয় সেগুলোর মূল কারণ নারী যৌনিতে সংক্রমণ।

হলুদ রঙের সাদা স্রাব নারী যৌনিতে খুব একটা চোখে পড়েনা। তবে নারী যৌনিতে হলুদ রঙের সাদা স্রাব দেখা দেওয়ার মূল কারণ হল ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ। এই ধরণের সাদা স্রাব মূলত তাদের হয়, যারা একাধিক সেক্স পার্টনারের সাথে সহবাস করেন।

০৪. খয়েরী রঙের সাদা স্রাব : যে সমস্ত নারীদের অনিয়মিত মাসিক ধর্ম হয় সেই সমস্ত মহিলাদের মধ্যে খয়েরী রঙের সাদা স্রাব হতে দেখতে পাওয়া যায়। আবার যে সমস্ত মহিলারা বয়স যৌবন ও বার্ধক্যবস্থা পেড়িয়ে,

পৌঢ় অবস্থায় প্রবেশ করছে এবং সেই মহিলার চিরতরের জন্যে মাসিক ধর্ম বন্ধ হতে চলেছে (Menopause), সেই সমস্ত মহিলাদের মধ্যে খয়েরী রঙের সাদা স্রাব দেখতে পাওয়ায় যায়। এই সমস্ত ক্ষেত্রে খয়েরী রঙের সাদা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার।

তবে উপযুক্ত কারণ ছাড়াই কোনো মহিলার যদি অতিরিক্ত খয়েরী রঙের সাদা স্রাব হয় তাহলে সেই মহিলাকে অবশ্যই যৌন রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ অনেক সময় খয়েরী রঙের সাদা স্রাব এর জন্যে Servical Canser এর মত রোগের সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুন : মেয়েদের গোপনাঙ্গের কালো দাগ দূর করার উপায়।

মেয়েদের সাদা স্রাব এর লক্ষণ (Meyeder Sada Sraber Lakhhan)

নারী শরীরকে প্রকৃতি নানান বিচিত্রতার মধ্যে দিয়ে গড়ে তুলেছেন। তাই সময়ের সাথে সাথে ঋতু পরিবর্তনের মত নারী শরীরে নানান ধরণের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। ঠিক সেইরকম ধরণের একটা পরিবর্তন হল মেয়েদের সাদা স্রাব হওয়া।

কিন্তু এখানে প্রশ্ন হল কি করে বুঝবেন আপনার সাদা স্রাবের (Vaginal Discharge) সমস্যা হচ্ছে ? আসলে মেয়েদের সাদা স্রাব এর লক্ষণ গুলো ঠিক কি কি ?

আমরা এই পংতিতে মেয়েদের সাদা স্রাব এর লক্ষণ গুলোর কথা বলব, নারী শরীরে এই ধরণের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে সেই নারীর সাদা স্রাবের সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্ত উপসর্গ দেখা দিলে মহিলাদের অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

০১. অনেক মহিলা আছেন যারা মাসিক ধর্ম শুরু হওয়ার আগে তলপেটে ব্যাথা অনুভব করেন, কিন্তু অনেক সময় বিনা মাসিকেই যদি আপনার তলপেটে অসহ্য ব্যাথা শুরু হয় তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার সাদা স্রাবের সমস্যা হচ্ছে।

০২. ঘরের নিয়মিত কাজ কর্ম মোটামোটি সব মহিলারাই করে থাকেন, তাতে ক্লান্তি অনুভব করা একটি স্বাভাবিক বিষয়। তবে শুধু শুধু বিনা কারণে, পরিশ্রম না করেও আপনি যদি ক্লান্তি অনুভব করেন তাহলে জানবেন আপনার সাদা স্রাবের সমস্যা আছে।

০৩. আপনার যদি মনে হয় আপনার শরীরটা হঠাৎ করে হালকা মনে হচ্ছে। মানে আপনার শরীরের হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়াটা হল সাদা স্রাব এর লক্ষণ।

০৪. মেয়েদের যৌনি পথ বার বার ভিজে যাওয়া অথাৎ যৌনিতে ভেজা ভাব অনুভব করা এবং তার সাথে যৌনিতে চুলকানি হলে বুঝতে হবে আপনার সাদা স্রাব এর জন্য এই সমস্ত উপসর্গ গুলো দেখা দিচ্ছে।

০৫. ঘন ঘন জ্বর আসা এবং শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি হওয়াটাও সাদা স্রাব এর লক্ষণের মধ্যে পড়ে।

০৬. হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই যদি আপনার ঘন ঘন অতিরিক্ত প্রসাব লাগে তাহলে সেটাও সাদা স্রাব এর লক্ষণের মধ্যে পড়ে।

০৭. সাধারণত মেয়েদের প্রতিমাসে একবার করে মাসিক হয়। মেয়েদের মাসিক শেষ হওয়ার পর থেকে মাসিক নতুন করে শুরু হওয়ার আগের মাঝামাঝি সময়ে যৌন মেলা মেশা করার সময় যৌনিতে যদি রক্ত ক্ষরণ, সাদা স্রাব এর একটি লক্ষণ।

০৮. চেহেরা ফেকাসে হয়ে যাওয়া, মেয়েদের চোখের নিচে কালি পড়া, চোখের নিচে গর্ত হয়ে যাওয়া সাদা স্রাব এর লক্ষণ।

০৯. অনেক সময় মহিলাদের বদ হজমের কারণে পেট ভারী হয়ে থাকে। ঠিক ঠাক ভাবে হজম না হলে বদহজমের জন্যে মেয়েদের মধ্যে সাদা স্রাব এর সমস্যা দেখা যায়।

১০. যৌন রোগের কারণে, যৌনিতে ইস্ট সংক্রমণ হয়ে গেলে সাদা স্রাব এর সমস্যা হয়।

মেয়েদের সাদা স্রাব কেন হয় (Meyeder Sada Srab Keno Hoy)

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় (Meyeder Sada Srab Dur Korar Ghoroya Prakitik Upay) গুলো জানার আগে মেয়েদের সাদা স্রাব কেন হয় তার কারণ গুলো জানাটা জরুরী একটা বিষয়।

কেননা মেয়েদের সাদা স্রাব কেন হয় বা সাদা স্রাব হওয়ার কারণ গুলো জানা থাকলে আগে থেকে Precautation নেওয়া যায়। আসুন তাহলে মেয়েদের সাদা স্রাব কেন হয় তার কারণ গুলো জানা যাক-

০১. সাদা স্রাবের এর মূল কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হল মেয়েদের যৌনি সংক্রমণের (Infection) স্বীকার হওয়া। কেননা মেয়েদের যৌনাঙ্গে সংক্রমণ দেখা দিলে যৌনিপথ দিয়ে সাদা স্রাব নিঃসৃত হয়।

০২. মেয়েদের যৌন অঞ্চল অপরিষ্কার থাকার কারণে সাদা স্রাব হতে পারে। যেমন- সময়ের সাথে নারী যৌনাঙ্গের উপরের লোম গুলো সময়মত সেভিং না করা, প্রসাবের পরে যৌনিপথ ভালোভাবে পরিষ্কার করে না ধোয়া।

মাসিকের সময়, নিয়মিত স্যানিটারি ন্যাপকিন বদল না করা, যৌনিতে সংক্রমণের হালকা উপসর্গ দেখা দিলে অজ্ঞানতার অভাবে নিমপাতা সহ ঈষদ গরম জলে যৌনিপথ না ধোয়া ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছনতার অভাবে যৌনি সংক্রমিত হয়ে সাদা স্রাবের সমস্যা হয়।

০৩. নারী শরীরে অপুষ্টির অভাব দেখা দিলে সাদা স্রাব এর সমস্যা হয়। প্রতিমাসেই নিয়ম করে নারী শরীরে মাসিক ধর্ম হয়। মাসিকের রক্ত ক্ষরণের জন্যে নারী শরীরে রক্তের সাথে সাথে আয়োডিন,

আয়রন, ক্যালসিয়াম ছাড়াও বিভিন্ন খনিজ উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। নারী শরীরে এই সমস্ত খনিজ উপাদান গুলোর চাহিদা মেটানোর জন্যে খাদ্যতালিকায় যথাযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য দ্রব্য রাখাটা দরকার।

০৪. মেয়েদের অতিরিক্ত সাদা স্রাব রোগটিকে ডাক্তারি ভাষায় লিকোরিয়া (Leucorrhoea) বলা হয়। নারীদেহে রক্তের ঘাটতি বা রক্তাল্পতা দেখা দিলে মেয়েদের অতিরিক্ত সাদা স্রাব (Leucorrhoea) রোগ হয়।

০৫. যে সমস্ত নারীরা অতিরিক্ত চিন্তা করে, অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হয় কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগে এবং যে সমস্ত নারীদের ডায়বেটিসের সমস্যা আছে, সেই সমস্ত নারীদের সাদা স্রাব হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে।

০৬. গনোরিয়ার (Gonorrhea) কারণে মেয়েদের সাদা স্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নারীদের পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে সহবাস করার সময় সংক্রমিত পুরুষ যৌনাঙ্গ থেকে নারীর যৌনাঙ্গে নানান ধরণের রোগ জীবাণু এসে বাসা বাঁধে

যার জন্যে অনেক সময় মেয়েদের অতিরিক্ত সাদা স্রাব দেখা যায়। তাই পুরুষ সঙ্গীর কিংবা নারী সঙ্গী যারই যৌন সমস্যা থাকুক না কেন সংক্রামিত যৌন রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্যে অবশ্যই সুরক্ষিত যৌন মিলন করা উচিত।

০৭. নারী দেহের নির্মাণকার্য যেমন জটিল, তেমনি তার জটিল সব রোগ ব্যাধি। অনেক সময় নানান ধরণের জটিল রোগের কারণে মহিলাদের বিভিন্ন ধরণের এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেতে হয়।

অতিরিক্ত এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার ফলে নারী শরীরে হরমোনাল ডিসব্যালেন্স হয় যা, মেয়েদের সাদা স্রাব (Viginal Discharge) হওয়ার প্রবণতাকে অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।

০৮. আজকালকার আধুনিক মহিলারা অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ রোধ করার জন্যে গর্ভনিরোধক বড়ি খান। কিন্ত এই গর্ভনিরোধক বড়ি যদি নিয়মিত খাওয়া হয় তাহলে নারী শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটে এবং মেয়েদের শরীরে নানান ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এই সমস্যা গুলোর মধ্যে অন্যতম সমস্যা হল মেয়েদের সাদা স্রাবের সমস্যা। তবে কোনো গর্ভবতী মহিলার কোনো কারণে আকসিডেন্টলি যদি গর্ভপাত হয়ে যায় অথবা মহিলারা অ্যাবরশন করায়, সেক্ষেত্রেও মেয়েদের সাদা স্রাবের সমস্যা দেখা দেয়।

০৯. যে সমস্ত মহিলারা একাধিক সেক্স পার্টনারের সঙ্গে সেক্স করেন তাদের যৌনিতে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়, যার ফলে সেই সমস্ত মহিলাদিকে সাদা স্রাবের (Vaginal Discharge) সমস্যায় ভুগতে হয়।

১০. অনেক মহিলা আছেন যারা অতিরিক্ত পরিমানে ছুঁচিবাই, যারা একটু বেশি পরিমানে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে ভালোবাসেন এবং তারা বার বার তাদের যৌনি সাবান জাতীয় রাসায়ানিক দ্রব্য দিয়ে পরিষ্কার করেন।

সাবানের মধ্যে সালফার , সোডা, জাতীয় অনেক রাসায়ানিক থাকে যা কোমল ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। আর মেয়েদের যৌনাঙ্গ হল একটি Open Ogran তাই খুব সহজেই

সাবান জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য নরম যৌনাঙ্গের ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। যার ফল স্বরূপ নারীদের যৌনাঙ্গে Infection হয়ে সাদা স্রাবের মত সমস্যা দেখা যায়।

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় (Meyeder Sada Srab Dur Korar Ghoroya Prakitik Upay)

এতক্ষন আমরা মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় আর্টিকেলে মেয়েদের সাদা স্রাব কি, মেয়েদের সাদা স্রাব কেন হয়, মেয়েদের সাদা স্রাব দেখতে কেমন হয়, মেয়েদের সাদা স্রাব এর লক্ষণ বিভিন্ন বিষয় গুলো নিয়ে আলোচন করলাম।

এবারে আপনাদের মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে, সাদা স্রাব বন্ধ করার ঔষধ, সাদা স্রাবের এর ঘরোয়া চিকিৎসা বা সাদা স্রাব দূর করার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘরোয়া টোটকার কথা বলব।

০১. ঢেঁড়স :

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় হিসাবে সেদ্ধ ঢেঁড়স সেবন অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার একটি অব্যার্থ ঔষধ হিসাবে সাবস্ত হয়েছে।

যে সমস্ত মেয়েদের সাদা স্রাব এর সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন চার-পাঁচটি ঢেঁড়স নেওয়ার পর ভালোকরে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিন। তারপর ঢেঁড়স গুলোকে ছোট ছোট চাকা চাকা করে কেটে

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়
মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়

কোনো একটি পাত্রে হাফ লিটার জল দিয়ে উনুনে ২০ মিনিট নাগাদ সেদ্ধ করুন। ঢেঁড়স গুলো ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে গেলে, ঢেঁড়স গুলোকে জল থেকে আলাদা করে একটি পরিষ্কার পাত্রে তুলে রাখুন।

তারপর ঢেঁড়স ফোটানো জল টাকে তিনভাগে ভাগ করে নিয়ে, ঢেঁড়স সেদ্ধর একভাগ জলের সঙ্গে পরিমানমত মধু মিশিয়ে, তিন ভাগ জল তিন বেলায় পান করুন। আর বাকি ঢেড়স সেদ্ধ গুলো দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে শুধুমুখে চটকে খান।

নিয়মিত ঢেঁড়স সেদ্ধ খেলে মেয়েদের সাদা স্রাবের সমস্যা হ্রাস পায়। এইভাবে টানা ০২-০৪ সপ্তাহ নিয়মিত ঢেঁড়স সেদ্ধ ও তার ফোটানো জল খেলে সাদা স্রাবের সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।

০২. ভাতের মাড় :

ভাতের ফ্যান বা ভাতের মাড় সাদা স্রাবের সমস্যার (Leucorrhoea) খুব ভাল একটি ঔষধ। যে সমস্ত মহিলারা সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কয়েকদিন ভাতের মাড় (Rice starch) সহ ভাত খেলে সাদা স্রাবের সমস্যার সুরাহা পাবেন।

সাদা স্রাব জনিত কারণে মহিলাদের ওজন অনেক কমে যায়। তাই ভাতের মাড় যেমন সাদা স্রাব প্রতিরোধ করে ঠিক তেমনই আবার প্রাকৃতিক ভাবে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে রোগা মহিলারা আগের মত তাদের স্বাস্থ্য ফিরে পেতে পারেন।

০৩. পেয়ারা পাতা :

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় হিসাবে পেয়ারা পাতা হল সাদা স্রাব দূর করার খুব ভালো একটি আয়ুর্বেদিক ঔষধ। সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুক্তভুগী রুগীরা সাদা স্রাবের হাত থেকে পরিত্রান পেতে হলে

নিয়ম করে পেয়ারা পাতা ফোটানো জল পান করুন। কয়েকটি কচিমত পেয়ারা পাতা নিয়ে ভালো করে ধুয়ে লিটার খানেক জলে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে অর্ধেক করে নিতে হবে।

তারপর পেয়ারা পাতা ফোটানো জলটি ঠান্ডা করে, নিয়মিত দুবার খাবার খাওয়ার ০১ ঘন্টা আগে পান করুন। এইভাবে মাস খানেক পেয়ারা পাতা ফোটানো জল খেলে আপনার সাদা স্রাবের পাশাপাশি যৌনিতে ইনফেকশন হওয়া সমস্যা গুলোও দূর হয়ে যাবে।

০৪. ধনিয়া (গোটা ধনে):

আমাদের সবার বাড়িতে রান্নাঘরে ধনে নিশ্চয় আছে, মেয়েদের সাদা স্রাব রোধে ধনে হল খুব একটি উপকারী ভেষজ। তাই যে সমস্ত মহিলাদের সাদা স্রাবের সমস্যা আছে তারা রাত্রি বেলা ঘুমোনোর আগে ০১-০২ চামচ গোটা ধনে নিয়ে

একটি কাঁচের বাটিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপরের দিন সকালবেলা ধনে গুলোকে আলাদা করে ছেঁকে নিয়ে ধনে ভিজে জল পান করুন। ধনে ভেজানো জল সেবন মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে আয়ুর্বেদিক ঔষধির মত কাজ করে।

০৫. আমলকি :

আমরা আগেই বলেছি অনেক সময় মেয়েদের পুষ্টিজনিত সমস্যার কারণে সাদা স্রাবের সমস্যা হয়। আমলকির মধ্যে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি (Vitamin C) রয়েছে তাই যে সমস্ত মহিলারা সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুগছেন তারা

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়
মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়

নিয়মিত আমলকি গুঁড়ো করে খেলে কিংবা মোরব্বা অথবা ক্যান্ডি বানিয়ে খেলে,মধু মিশিয়ে আচার বানিয়ে দিনে দুবেলা খেলে রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি মেয়েদের শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়।

০৬. মেথি দানা :

মেথি হল মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার উত্তম একটি আয়ুর্বেদিক ঔষধি। যে সমস্ত মহিলাদের বধ হজমের সমস্যা আছে তাদের মধ্যেও সাদা স্রাব হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে।

তাই যে সমস্ত মহিলারা বধহজমের জন্যে সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুগছেন তারা রাত্রিবেলা ঘুমোনোর আগে ০১-০২ চামচ মেথি সারারাত ধরে হাফ লিটার ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখুন। তার পরের দিন সকাল বেলা মেথি দানা গুলো আলাদা করে

মেথি ভেজা জলটুকুর সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে পান করুন। এইভাবে মোটামোটি ০২ সপ্তাহ নাগাদ নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে মেথি ভেজানো জল পান করুন দেখবেন সাদা স্রাবের সমস্যায় উপকার পাবেন।

০৭. তুলসি :

তুলসি পাতা হল একটি আয়ুর্বেদিক ভেষজ অতি উত্তম ঔষধি। তুলসি পাতা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ক উপাদান হিসাবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে।

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়
মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়

তাই যে সমস্ত মা বোনেরা সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্যে তুলসি পাতা সেবন খুব উপকারে লাগতে পারে। এর জন্যে আপনাকে প্রতিদিন একমুঠো তুলসি পাতা হাতে করে নিয়ে

পরিষ্কার জলে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে সিল বাটায় ভালো করে তুলসি পাতা গুলোকে থেঁতলে রস বার করে নিতে হবে। তারপর তুলসি পাতার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে তুলসী পাতার রস কিংবা মধু কিংবা মিছরি জলের মিশ্রণ,

দিনে দুবার অন্তত ১৫ দিন সেবন করুন দেখবেন সাদা স্রাবের সমস্যায় উপকার পাচ্ছেন। এছাড়াও জিরা সহ গরুর দুধের সঙ্গে তুলসি পাতার রস হপ্তা দুয়েক খেলেও উপকার পাবেন।

০৮. কলা :

যে সমস্ত মহিলারা মাসিকের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে হাফ গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চামচ মধু অথবা মিছরি সহ পাকা কলা মিশিয়ে কলার জুস পান করলে সাদা স্রাবের সমস্যায় প্রতিকার পাবেন।

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়
মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়

এছাড়া দুপুরের খাওয়ার পাতে নিয়মিত কলা সেদ্ধ করে খেলে কিংবা কাঁচা কলার তরকারি রান্না করে খেলে সাদা স্রাবের সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।

০৯. বেদানা :

বেদানা ও বেদনার রস আপনি ও আমি সবাই কমবেশি খায়। তাই বেদানার রস খান, কিংবা চিবিয়ে খান, বেদনার রস মানব দেহে রক্ত তৈরী করতে সাহায্য করে।

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়
মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায়

কিন্তু বেদনার পাতাও ফেলনা নয় ! প্রতিদিন নিয়ম করে ২০-৩০ টা বেদানা পাতার সঙ্গে গোল মরিচ সহযোগে একসাথে চিবিয়ে খেলে, মেয়েদের সাদা স্রাবের সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।

১০. শুকনো আদা (সোঁঠ) :

যে সমস্ত মহিলারা সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন রাত্রি বেলা ঘুমোনোর আগে ০২-০৩ চামচ শুকনো আদা গুঁড়ো ২০৫ মিলি জলে ভিজিয়ে রাখুন।

পরেরদিন সকাল বেলা আদা গুঁড়ো সহ জল টাকে গরম করে ফুটিয়ে নিয়ে অর্ধেক করে নিন। তারপর জলটাকে ঠান্ডা করে আদা গুঁড়ো ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা জলটুকু পান করুন।

১১. ফিটকারি :

ফিটকারি হল খুব ভালো একটি এন্টিসেপ্টিক। সকাল বেলা ফিটকারি গুঁড়ো জলে মিশিয়ে দিনে দুবার ফিটকারি ভেজা জল খেলে অল্প দিনের মধ্যেই মেয়েদের সাদা স্রাব বন্ধ হয়ে যায়।

১২.অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার :

অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের মিশ্রণ মানবদেহের পিএইচ এর ভারসম্য নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং তার সাথে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার হল খুব ভালো এন্টিসেপ্টিক যা আমাদের যৌনাঙ্গের এসিডের তারতম্যকে নিয়ন্ত্রণ করে।

তাই যে সমস্ত মা বোনেরা সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুগেন তারা পরিমান মত বিশুদ্ধ জলে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে একদম সকাল বেলা এবং রাত্রি বেলা শোবার সময় প্রসাব ত্যাগ করে দিনে দুবার যৌনিপথ পরিষ্কার করে নিন।

তাছাড়া আপনি চাইলে একটু কষ্ট করে প্রতিদিন সকালবেলা পানীয় জলের সাথে ০১ চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে দিনে অন্তত একবার পান করুন তাতে পেট এবং প্রজনন অঙ্গ ঠান্ডা থাকবে।

প্রশ্ন- সাদা স্রাব প্রতিরোধে কি করণীয় ?

উঃ- সাদা স্রাব প্রতিরোধ করার জন্যে কখনো খালি পেটে থাকা উচিত নয়। প্রতিদিন নিয়ম করে রাত্রি না জেগে সময় করে রাত্রে পর্যাপ্ত পরিমানে (০৬-০৭ ঘন্টা) ঘুমোতে হবে। যৌনিতে জ্বালা,পোড়া, অনুভূত হলে জরায়ুর মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে ধুতে হবে। পিরিয়ড হলে সময় সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলাতে হবে এবং চেষ্টা করতে হবে যৌনি যেন সর্বদা যেন শুকনো থাকে। এছাড়া, ভাজা,পোড়া,ফাস্ট ফুড এবং এলার্জি যুক্ত খাবার গুলো একদম খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

প্রশ্ন- কমবয়সী মেয়েদের সাদা স্রাব হলে কি করণীয় ?

উঃ- অপ্রাপ্ত বয়স্ক কমবয়সী মেয়েদের সাদা স্রাবের সমস্যা হলে সবার প্রথমে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে এবং ০৪-০৫ ঘন্টার ব্যবধানে সময়মত পাল্টাতে হবে। এরপর হাফ চামচ চিনি, আধ চামচ বট পাতা গুঁড়ো সহ এক চামচ অশোক গাছের ছাল বেঁটে খেতে হবে। তারপর ০৪ চামচ মৌরি, ০৪ চামচ জোয়ান এবং একইসাথে ০৮-১০ টি নিম পাতা গরম জলে ফুটিয়ে নিয়ে সেই ঈষদ গরম জল দিয়ে যৌনি পরিষ্কার করতে হবে। কিন্তু যদি কোনো কমবয়সী মেয়ের অতিরিক্ত সাদা স্রাব হয় তাহলে এক গ্রাম ভালো মানের ডুমুর গাছের ছাল ও দুই-তিন গ্রাম শিমুল গাছের শুকনো ছাল গুঁড়ো করে জলে ভিজিয়ে রেখে, সেই জল পান করলে সাদা স্রাবের মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। যৌনিতে অতিরিক্ত সাদা স্রাবের ইনফেকশন এড়ানোর জন্য ০৫-০৬ টি ডালিম ফুল বেঁটে এক চামচ আখের গুড় এবং হাফ চামচ সাদা চন্দন গুঁড়োর সঙ্গে এক কাপ মত গায়ের দুধ মিশিয়ে মলম তৈরী করে যৌনিতে লাগালে যৌনি সংক্রমণের সম্ভবনা এড়ানো যায়।

প্রশ্ন- সাদা স্রাবের সময় পেটে ব্যাথা হলে কি করণীয় ?

উঃ- ০১. অশোক গাছের ছাল ও সহদেবী গাছের ছাল জলে সেদ্ধ করা জল এক দিন বাদ বাদ খেতে হবে।
০২. উচ্ছের রস হালকা গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে উপকার পাবেন।
০৩. রাত্রিবেলা শোয়ার আগে হরতকি গুঁড়ো গরম জলে ভিজিয়ে রেখে ঠান্ডা করে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
০৪. বাজারে উপলব্ধ হট ওয়াটার ব্যাগ গুলো পেটে চেপে ধরে সেঁক নিলে পেট ব্যাথায় উপশম পাওয়া যায়।

প্রশ্ন- মেয়েদের সাদা স্রাব কেন হয় ?

উঃ- মেয়েদের যৌনিতে ব্যাকটেরিয়াল Infection দেখা দিলে মেয়েদের সাদা স্রাব হয়।

প্রশ্ন- মেয়েদের সাদা স্রাব কি ?

উঃ- সাদা স্রাব হল মেয়েদের মাসিক ধর্মের মত একটি শারীরিক বৃত্তীয় পক্রিয়া যা স্বাভাবিক নিয়মে হয়ে থাকে।

পরিশিষ্ট

মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা এতক্ষন সাদা স্রাব দূর করার ঔষধ স্বরূপ মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার কতগুলো ঘরোয়া টোটকা তুলে ধরলাম।

আশাকরি মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় গুলো পালন করলে সাদা স্রাবের সমস্যায় ভুগছেন এমন মা ও বোনেরা আশা স্বরূপ ভালো ফল পাবেন।

তবে একটা কথা মনে রাখবেন আমাদের আর্টিকেলে মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার উপায় হিসাবে যে সমস্ত উপাদান গুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক নিয়মে সাদা স্রাব দূর করার প্রাথমিক ঘরোয়া উপাচারের কথা বলা হয়েছে।

সুতরাং আপনাদের কারো যদি অতিরিক্ত সাদা স্রাবের সমস্যা হয় তাহলে এই সমস্ত উপাচারের উপর আস্থা না রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ভালোমানের যৌন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটাই শ্রেয়।

পরিশেষে এটাই বলব আমাদের লেখা মেয়েদের সাদা স্রাব দূর করার ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপায় আর্টিকেল টি আপনাদের কেমন লাগল আপনাদের মতামত অবশ্যই জানাবেন।

আর যদি আমাদের লেখা আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের আরো ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে শেয়ার করবেন হয়ত তারাও আপনার মত আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবে। ধন্যবাদ।

4.7/5 - (4 votes)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here