কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। আর পার্বন মানেই হৈ-হুল্লোড়, ভুঁড়িভোজ আরো কত কি ? এই আর্টিকেলে আমরা বাঙালিদের তেরো পার্বনের অন্যতম উৎসব জামাই ষষ্ঠী কী অথাৎ জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় ?
জামাই ষষ্ঠীর খুঁটি নাটি নিয়ে বাঙালিদের তেরো পার্বনের অন্যতম পার্বন জামাই ষষ্ঠীর তাৎপর্য কি ? জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় ? সেটা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।
বৈদিক শাস্ত্রে বিভিন্ন লৌকিক দেব দেবীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং মানুষ সেই সমস্ত দেব দেবীদের স্ব-মহিমায় মনের মনিকোঠায় স্থান দিয়েছেন। বাংলার সেই সমস্ত লৌকিক দেবদেবীদের মধ্যে অন্যতম এক দেবী হলেন মা ষষ্ঠী।
প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী মানুষ দীর্ঘ্যকাল ধরে বিশ্বাস করে আসছেন মা ষষ্ঠীর আরাধনায় বন্ধ্যা নারীর কোলে সন্তান আসে। তবে এই বিশেষ দেবী মা ষষ্ঠীর কোন বিশেষ প্রকারের বিগ্রহ বা প্রতিমা দেখতে পাওয়া যায় না।
মা ষষ্ঠী সাধারণত তাঁর নিজস্ব থানে পূজিত হন। এখানে থান বলতে মা ষষ্ঠী যেই জায়গায় অথাৎ যে স্থানে পূজিত হন সেই জায়গাটির অপভ্ৰংশ হিসাবে ‘স্থান’ কথাটিকে ‘থান’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মা ষষ্ঠীকে বেদে আবার উর্বরাতার দেবী বলেও চিহিত করা হয়েছে। এমনিতে প্রত্যেকমাসে ষষ্ঠীর ব্রত থাকলেও মূলত বাঙালিদের মধ্যে দূর্গা ষষ্ঠী এবং জামাই ষষ্ঠী হল অধিক জনপ্রিয় দুই ষষ্ঠী।
প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠীকেই মা ষষ্ঠীর উপাসনার জন্যে বেছে নেওয়া হয়। তবে এই ষষ্ঠীর সঙ্গে জামাই ষষ্ঠী কথাটিও কালের বিবর্তনে ধর্মসংশোধকদের বিধানে বাঙালি হিন্দু সভ্যতার সাথে জড়িয়ে গেছে।
আর সেই কাল থেকে আজও শশুড় বাড়িতে জামাই ষষ্ঠিতে শাশুড়ীদের জামাই আদরের পরম্পরা চলে আসছে। তবে বাংলায় জামাই ষষ্ঠীর প্রচলন মঙ্গল কাব্যের রচনাকাল অথাৎ মধ্যযুগেই প্রচলন হয় বলে মনে করা হয়।
জামাই ষষ্ঠীর মাধ্যমে মেয়েদের শশুড় বাড়ীর জীবন অথ্যাৎ মেয়ের সংসার জীবন যাতে সুন্দর ও মসৃণভাবে চলে তার জন্যে জামাই ষষ্ঠিতে জামাই বরণের মাধ্যমে শশুড়বাড়ির সঙ্গে জামাইয়ের সম্পর্ক সুদৃঢ করার লক্ষ এই লৌকিকতার অন্যতম মাধ্যম বলেও মনে করা হয়।
শাশুড়ী মায়েদের জামাইকে নিজের সন্তান মনে করে নিজ সন্তান বলে পরিচয় দেওয়ার এক উত্তম লোকাচার বা অনুষ্ঠান হল জামাই ষষ্ঠীর পার্বন। একইসাথে মেয়ের কোলে সন্তান প্রাপ্তি এবং শাশুড়িদের ঠাকুমা/দিদিমা হওয়ার সুপ্ত বাসনাও লুকিয়ে থাকে জামাই ষষ্ঠীর মত লোকাচারের মাধ্যমে।
জামাই ষষ্ঠী কী (Jamai Soshthi Ki)
একটা সময় ছিল যখন হিন্দু পরিবারের মেয়ের বাবা মায়ের, মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার পর মেয়ে যতদিন পর্যন্ত সন্তান সম্ভবা কিংবা তার যতদিন পর্যন্ত ছেলে পুলে না হচ্ছে ততদিন মেয়ের বাবা মায়ের মেয়ের শশুর বাড়িতে পদার্পন করা পুরোপুরি নিষেধ ছিল।
হিন্দু ধর্মের তৎকালীন এইরকম সমাজ ব্যবস্থার ফলে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার পর দীর্ঘ্যদিন বাবা মাকে মেয়ের সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করতে হত। সমাজের এইরকম বিধানের ফলে বাবা মায়ের কাছে মেয়ের মুখ দেখার বা মেয়ের সাথে দেখা করার কোনো উপায় ছিল না।
এর প্রতিবিধান স্বরূপ ধর্মসংস্কারকরা এই সমস্যার সমাধান হিসাবে একটি নতুন বিধান প্রনয়ন করেন। সমাজের বিধানদাতারা জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল ষষ্ঠীকে জামাই ষষ্ঠী হিসাবে পালন করার এক নতুন রীতি রেওয়াজের প্রবর্তন করেন।
জামাই ষষ্ঠীতে নিমন্ত্রণ পেয়ে, মেয়ে জামাই এক সাথে মেয়ের বাপের বাড়ী আসে। জামাইয়ের সাথে মেয়ের বাপের বাড়ীতে আসার ফলে মেয়ের বাবা মায়ের একসাথে মেয়ে জামাইয়ের মুখ দর্শন হয়ে যায়।

একইসাথে মা ষষ্ঠীর দোহায় দিয়ে মা ষষ্ঠীর আরাধনার মাধ্যমে মা ষষ্ঠীকে প্রসন্ন করে মেয়ে জামাইয়ের মঙ্গল কামনায় মেয়ে যাতে শশুর বাড়িতে হাঁসি-খুশিতে থাকে এবং শীঘ্র সন্তানের মা হতে পারে মা ষষ্ঠীর কাছে সেই বড় চাওয়া হয়।
এখন অবশ্য এইসব প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেলেও তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় মেয়ের বাবা কিংবা যে ব্যক্তি মেয়ের বিয়েতে কন্যা সম্প্রদান করতেন তিনি এক বছর মেয়ের বাড়ির অন্নজল গ্রহণ করতে পারতেন না।
হিন্দুধর্মের এই সমস্ত সংস্কার আজ বিলুপ্ত হয়ে গেলেও সংশোধিত হিন্দু সংস্কারনুযায়ী জামাই ষষ্ঠিতে মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ করে সমাদর করা এবং কন্যার সন্তান কামনায় মা ষষ্ঠীর পুজো করার এই উৎসবের মধ্যে দিয়েই জ্যৈষ্ঠ মাসের এই ষষ্ঠী জামাই ষষ্ঠীর তকমা পেয়েছে।
অবশ্যই পড়ুন : জামাই ষষ্ঠীর শুভেচ্ছা বার্তা কবিতা sms
জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় (Jamai Soshthi Keno Palon Kora Hoy)
জামাই ষষ্ঠী কী এবং জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় ? এই দুটি জিনিসের তাৎপর্য প্রায় একই রকম। আসুন তাহলে আপনাদের জামাই ষষ্ঠী কী ? মানে জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় ? জামাই ষষ্ঠীর মূল তাৎপর্য টুকু তুলে ধরি।
লোকমুখে শোনাযায় একটি বনেদী পরিবারের দুই জন বউ ছিল। বনেদী পরিবারে ঝি, চাকর, খাবার, দাবার এর কোনো অভাব ছিলনা। তবে দুই বউ এর মধ্যে ছোট বউ ছিল মহলোভী একজন মহিলা।
বাড়িতে ভালমন্দ মাছ, মাংস ইত্যাদি পদ রান্না হলে সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে ফেলত, আর শাশুড়ি মায়ের কাছে কালো বেড়ালে সব খেয়ে নিয়েছে বলে বেড়ালের ঘাড়ে দোষ চাপাত। বেড়াল হল মা ষষ্ঠীর বাহন।
ছোট বউয়ের কাছে প্রতিদিন একই রকম অভিযোগ শুনে শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে বেড়ালটি একদিন মা ষষ্ঠীর কাছে ছোট বউয়ের নামে নালিশ করলেন। বেড়ালের কাছে সমস্ত কিছু শুনে মা ষষ্ঠী তার বাহনকে অসম্মান করাই খুবই অসন্তুষ্ট হলেন।
এরপর মা ষষ্ঠী ছোট বউয়ের ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেওয়া শুরু করলেন। ফল স্বরূপ মা ষষ্ঠীর ক্রোধের প্রকোপে যতবার ছোট বউ সন্তান প্রসব করত, ততবার তার মৃত সন্তান প্রসব হত। মা ষষ্ঠীর প্রকোপে ছোট বউ এর একে একে ০৭ জন পুত্র এবং ০১ জন কন্যা তারা সবাই মৃত অবস্থায় প্রসব হয়।
এইভাবে মা ষষ্ঠীর অসন্তুষ্টতায় ছোট বউ সন্তান হারা হয়ে শশুড় বাড়িতে লাঞ্ছনা ও গঞ্জনার স্বীকার হয় এবং শেষ পর্যন্ত শশুড় বাড়ির লোকজন তাকে অলক্ষী বলে ঘর থেকে বার করে দেয়। অপরদিকে বাড়ির বড় বউ তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে সুখ স্বাচ্ছন্দে ঘর করতে থাকে।
নিরুপায় ছোট বউ মনের দুঃখে কাঁদতে কাঁদতে বনে চলে যায় এবং সেখানে তিনি এক গাছ তলায় আশ্রয় নেন। মা ষষ্ঠী তখন ছোট বউয়ের কাছে এক বুড়ীর ছদ্মবেশে এসে তার কান্নার কারণ জানতে চান।
ছোট বউ তখন মা ষষ্ঠীর কাছে তার দুঃখের কারণ খুলে বলেন ! মা ষষ্ঠী শুনে পরে ছোট বউকে তার অনাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়। ছোট বউ তখন কান্নায় ভেঙে পড়ে এবং মা ষষ্ঠীর কাছে ক্ষমা চায়।
মা ষষ্ঠী তাকে ক্ষমা করে দেন। এরপর তাকে পায়ঃশ্চিত্তের বিধান স্বরূপ ভক্তিভরে মা ষষ্ঠীর পূজা করার জন্যে বলেন। এরপর ছোট বউ মা ষষ্ঠীর ভক্তিভরে পূজা করেন এবং একে একে তার হারানো ০৭ সন্তানকে ফিরে পান।
এই ঘটনার পর মা ষষ্ঠীর মাহাত্ম্য লোকমুখে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে, আর মানুষ সন্তান প্রাপ্তির আশায় মা ষষ্ঠীর আরাধনা করতে থাকেন। এটাই ছিল মা ষষ্ঠী/জামাই ষষ্ঠী/ অরণ্যষষ্ঠীর ব্রতকথা।
জামাই ষষ্ঠীতে জামাই বরণ
আমরা উপরের অনুচ্ছেদ দুটিতে জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় এবং জমাই ষষ্ঠী কী ? দুটো জিনিস দুটো পঙতিতে আলোচনা স্বাপেক্ষে আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। এবারে কথা হল জামাই ষষ্ঠিতে জামাই বরণ এবং মা ষষ্ঠীর আরাধনা কীভাবে করতে হয় ?
হিন্দু পূজা পার্বনের এক অভিন্ন অঙ্গ হল পূজার ডালি। তেমনি মা ষষ্ঠীর পূজাতেও পুজোর ডালি হল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মা ষষ্ঠীর পূজার ডালি তে কাঁঠাল পাতার উপর বিশেষ ভাবে ফল,মূল আদি সাজানো হয়।

কাঁঠাল পাতার উপর ০৫ থেকে ০৯ রকমের ফল থাকে। এর মধ্যে করমচা, লিচু, খেজুর, তাল এবং ১০৮ টি দূর্বা ঘাস দিয়ে বানানো দূর্বা গাছা ইত্যাদি উল্লেখনীয়। মা ষষ্ঠীর পূজার দিন সকাল সকাল শাশুড়ী মায়েরা স্নান সেরে ঘট ভরেন।
সেই ঘটের উপর সিঁদুরের স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে আমের শাখা রেখে দেন। আর থাকে তালপাতার পাখা। ১০৮ টি দূর্বা বাঁধা আঁটি দিয়ে পূজার উপকরণ পূজার ডালিতে সাজানো হয়। এরপর সাত রকমের ফল কেটে কাঁঠাল পাতার উপর সাজিয়ে রাখতে হয় শাশুড়িকে।
তারপর সুতোর গোছা করে তাতে হলুদ তেলে ডুবিয়ে, ফুল, বেল পাতা,বাঁশ পাতা ইত্যাদি গিঁট বেঁধে সাজানো হয়। এরপর শঙ্খ নিনাদ করে ষষ্ঠী তলায় গিয়ে মা ষষ্ঠীর পূজা আরম্ভ করা হয়। মা ষষ্ঠীকে সিঁদুর, হলুদ তেল, বেলপাতা, দূর্বা, ফল, মিষ্টান্ন আদি দিয়ে পূজা করা হয়।
তারপর মা ষষ্ঠীর ব্রতকথা পাঠ করা হয়। এরপর সবাইকে জল দিয়ে ভেজানো বেনার (তালপাতার পাখার) দিয়ে বাতাস করা হয়। এরপর মা ষষ্ঠীর সুতা সন্তানাদিদের হাতে বেঁধে উপবাস ভঙ্গ করা হয়।
জামাই ষষ্ঠীতে মেয়ে জামাই শশুড় বাড়ী এলে শাশুড়ী মা ঘটের জলে ভিজিয়ে তালপাতার ভেজা বাতাস দেয় মেয়ে জামাইকে। তারপর শাশুড়ি মা জামাইয়ের কপালে আলোতে করে হলুদের ফোঁটা দেন এবং নিজের হাতে জামাইয়ের কব্জিতে হলুদ সুতো বেঁধে দেয়।

এরপর শাশুড়ি মা জামাইকে পাখার বাতাস দিতে দিতে তিন বার "ষাট-ষাট-ষাট"
বলে দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন। জামাই ষষ্ঠীর ষাট-ষাট-ষাট ছড়াটা কিছুটা এরকম –
জ্যৈষ্ঠ মাসে অরণ্য ষষ্ঠী,ষাট ষাট ষাট
শ্রাবণ মাসে লোটন ষষ্ঠী,ষাট ষাট ষাট
ভাদ্র মাসে মন্থন ষষ্ঠী,ষাট ষাট ষাট
আশ্বিন মাসে দুর্গা ষষ্ঠী,ষাট ষাট ষাট
অঘ্রাণ মাসে মূলা ষষ্ঠী,ষাট ষাট ষাট
পৌষ মাসে পাটাই ষষ্ঠী, ষাট ষাট ষাট
মাঘ মাসে শীতল ষষ্ঠী,ষাট ষাট ষাট
চৈত্র মাসে অশোক ষষ্ঠী,ষাট ষাট ষাট
বারো মাসে তেরো ষষ্ঠী ষাট ষাট ষাট |’
তারপর জামাইকে মা ষষ্ঠীর প্রসাদ দেন। এরপর জামাইয়ের হাতে শাশুড়ি মা জামাই ষষ্ঠীর বিশেষ উপহারটি হাতে ধরিয়ে দেন। যাইহোক এইসব আচার অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হল শাশুড়ী মায়ের জামাই বরণের মাধ্যমে মেয়েদের মাতৃত্ব,সন্তান ধারণ এবং বংশবৃদ্ধি করা। তারসাথে মেয়ে যাতে শশুড় বাড়িতে সুখ শান্তিতে দাম্পত্য জীবন যাপন করতে পারে তার জন্যে মা ষষ্ঠীর কাছে মঙ্গল পূজা করা।
অবশ্যই পড়ুন : শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী কেন পালন করা হয় ও জন্মাষ্টমীর মাহাত্ম্য।
জামাই ষষ্ঠীতে জামাইয়ের তত্ব
আমাদের আর্টিকেলের বিষয় বস্তু হল জামাই ষষ্ঠী কী অথাৎ জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় ? আর জামাই ষষ্ঠীতে জামাইয়ের তত্ব বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। জামাইয়ের প্রতি শাশুড়ী মায়ের স্নেহ যেমন থাকে তেমন তত্ব মানে উপহারের ডালিও থাকে পরিপূর্ণ।
শশুরবাড়ি থেকে জামাইকে জামাই ষষ্ঠীর তত্বে যে সমস্ত জিনিস গুলো দেওয়া হয় সেই সমস্ত জিনিস গুলো হল- শার্ট, প্যান্ট, ঘড়ি, সানগ্লাস, রুমাল, ওয়ালেট , জুতো, ছাতা, পারফিউম, সেভিং কিট ইত্যাদি ছাড়াও সোনার চেন, আংটি ইত্যাদি দেওয়া হয়।
জামাই ষষ্ঠীর খাওয়া দাওয়া
বাঙালির জামাই ষষ্ঠীর ভুঁড়িভোজ কেমন হবে তা আর নতুন করে বলার নয়। তবুও জামাই ষষ্ঠীর দিন শাশুড়ী মা জামাইয়ের জন্যে স্পেশাল ভুঁড়িভোজরে আয়োজন করেন। যেমন- পাতের শুরুতে গরম গরম বেগনি আর শাক ভাজা,
তারপর আলু চিপস, গরম ভাতের সঙ্গে হালকা গাওয়া ঘী। এরপর পাতে পাঁচ রকম ভাজা, মাছের মাথা দিয়ে মুগ ডাল, চিংড়ী মাছের মালাইকারী, রুই পোস্ত, সর্ষে ইলিশ, দই কাতলা, গলদা চিংড়ি, কচি পাঁঠার মাংস আরো কত কি।
দাঁড়ান জামাই আদর এখুনি সব শেষ হয়ে যায়নি এখনো জামাই বাবাজীর পেটের কোনে জায়গা খালি ? এই শুন্যস্থান পূরণ করা হয় বাঙালীর শেষ পাতে রসনাতৃপ্তি মিষ্টিমুখ রসগোল্লা, তার সাথে দই, চাটনি আর পাঁপড় ভাজা তো চায়-ই চায়। সর্বশেষ মুকসুদ্ধি মিঠাপাতি পান। আর সর্বশেষ প্রণামী (দক্ষিনা) সেটা আর নতুন করে বলতে হবেনা নিশ্চয়।
প্রশ্ন :- জামাই ষষ্ঠী কবে ?জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয়
উঃ- জামাই ষষ্ঠী ২৫ শে মে বৃহস্পতিবার।
পরিশিষ্ট
জামাই ষষ্ঠী কী বা জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় ? এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জামাই ষষ্ঠীর মূল কথা গুলো আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। হিন্দু রীতি রেওয়াজে এই রকম অনেক ব্রত ও পার্বন আছে।
তবে বাঙালি সংস্কৃতিতে জামাই ষষ্ঠীর গুরুত্ব কিছুটা অন্যরকম। ভাতৃ দ্বিতীয়ায় ভাইফোঁটা, অরণ্য ষষ্ঠীতে জামাই ষষ্ঠী উদযাপন করার এই পরম্পরা অতি প্রাচীন কাল ধরেই বাঙালিদের সংস্কৃতিতে জড়িয়ে গেছে।
তবুও আপনাদের জামাই ষষ্ঠী কী বা জামাই ষষ্ঠী কেন পালন করা হয় ? এই আর্টিকেল সংক্রান্ত কোনো ধরণের প্রশ্ন মাথায় থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব আপনার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।