গরমে ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় (Gorome Ghamachi Dur Korar Ghoroya Upay)

আপনি কি গরমে ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় খুঁজছেন ? তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই ঢুঁ মেরেছেন। মার্চ মাস শেষ হতে না হতেই গরমের আবির্ভাব ঘটে, কিন্ত গরমে আমজনতার জীবনযাপনে ঘামাচি একটি বড় সমস্যা হয়ে মাথা চারা দেয়।

এই আর্টিকেলে আমরা ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় অথাৎ ঘামাচি (Heat rash) তাড়ানোর ঘরোয়া কতগুলো উপায়ের কথা বলব। এমনিতেই আমপাবলিকের কাছে গরম আবহাওয়াটা অসস্তিকর,

তার উপর ত্বকের উপর ঘামাচি! উফঃ ! ভাবা যাচ্ছেনা, মোট কথা ঘামাচি জিনিসটাই এমন যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জ্বালা। প্রথমে ঘামাচি হলে জ্বালা, তারপর ঘামাচি সেরে গেলে আবার ঘামাচির দাগ শরীরে থেকে যাওয়া,

সেটাও আবার আর একরকম জ্বালা। এবারে ভাবুন দেখি এই গরমে আমরা মানে প্রাতঃ বয়স্কদের ঘামাচি নিয়ে যদি এত দুর্ভোগ হয়, তাহলে বাচ্চা শিশুদের ঘামাচি হলে তাদের কাছে ঘামাচি জিনিসটা কতটা অস্বস্তিকর।

তাই আজকে আমাদের আর্টিকেল ঘামাচি কেন হয় ? ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় অথাৎ ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আপনারা যারা ঘামাচির সমস্যায় ভুক্তভোগী এবং যারা ঘামাচি তাড়ানোর উপায় খুঁজছেন তাদের জন্যে ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় আর্টিকেলটি আশাকরি খুবই ফলপ্রদ হবে।

ঘামাচি কী (What is Heat rash)

ঘামাচি জিনিসটা আমাদের ত্বকে হয়, আর যেটা আমাদের ত্বকে হয় তাই হল চর্মরোগ। সুতরাং আমরা ঘামাচিকে এক প্রকারের চর্মরোগ বলতে পারি। ডাক্তারি ভাষায় ঘামাচিকে আবার মিলিয়ারিয়া (Mliaria) বলা হয়।

ঘামাচি শব্দটার উৎপত্তি হয়েছে ঘাম থেকে, আর আমাদের শরীরে ঘামাচি হওয়ার মূল কারণ হল ঘাম। অতিরিক্ত গরমের কারণে আমাদের শরীর জুড়ে কখনো লাল আবার কখনো জল মুখো সাদা রঙের বিন্দু বিন্দু ফুসকুড়ি দেখতে পাওয়া যায়।

ঘামের ব্যাকটেরিয়ার কারণে হওয়া এই বিন্দু বিন্দু ফুসকুড়ি গুলোই হল আসলে ঘামাচি বা হিট র‍্যাশ (Heat rash)। তবে ঘামাচি হলে অনেক ক্ষেত্রে চুলকায়, তবে এটাও ঠিক যে, সব ক্ষেত্রে ঘামাচি হলেই যে চুলকাবে সেরকম কোনো কথা নেই।

অনেক সময় ঘামাচি হলেও আপনার ত্বকে জ্বালা পোড়ার অনুভূতি না হতেও পারে, তাই অনেকেই ঘামাচি হওয়ার পর জ্বালা পোড়া থেকে আরামের জন্যে ঘামাচির পাওডার লাগায়।

ঘামাচি কেন হয় ( Why is itching in human body)

প্রসাব ও পায়খানার ন্যায় ঘাম হল মানব শরীরের একটি রেচন পদার্থ। আর রেচন পদার্থের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের রোগ-জীবাণু থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের শরীরের উপরের ত্বকে ঘর্মগ্রন্থি থাকে,

আর যখন বাইরের আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে কিংবা কায়িক পরিশ্রমের ফলে মানব শরীর গরম হয় তখন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে প্রাকৃতিক নিয়মেই

আমাদের শরীরের রক্ত ও কোষ ইত্যাদির মধ্যে মিলেমিশে থাকা জল রেচন পদার্থ স্বরূপ ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি দিয়ে বার হয়ে যায়। গরমকালে শরীরে ঘাম হলে শরীরের লোম কূপ গুলোতে ময়লা জমতেও দেখা যায়,

যার ফলে অনেক সময় ঠিকমত শরীরের মৃত কোষ এবং শরীরের লোম কূপ গুলোতে ধুলোবালি জমে থাকার জন্যে ঘর্মগ্রন্থি থেকে ঠিকভাবে ঘাম নিঃসরণ হতে পারেনা।

তখন আমাদের শরীর থেকে বেরিয়ে আসা রেচন পদার্থ স্বরূপ ঘামের মধ্যে মিশে থাকা স্টেফ এপিডারমাইডিস নামের ব্যাকটেরিয়া আমাদের ত্বকের সংস্পর্শে এসে আমাদের শরীরের ত্বকে ঘামাচির (Heat rash) সৃষ্টি করে।

আরো পড়ুন :

ঘামাচি কত রকমের হয় (Type of Heat rash)

সাধারণত আমরা মানুষের শরীরের মধ্যে তিন ধরণের ঘামাচি দেখতে পাওয়া যায়- ০১. মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টিলিনা,০২. মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা, এবং ০৩. মিলিয়ারিয়া রুব্রা।

০১) মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা (Miliaria Cristalina) :-

মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টিলিনা ঘামাচি (Rash) হল একধরণের সাধারণ ঘামাচি, যেটা আমাদের সবার ত্বকের মধ্যেই কম বেশি গরম পড়লে ছোট ছোট দানা দানা হিসাবে চোখে পড়ে আর এই ধরণের ঘামাচি ততটা মারাত্মক না।

০২) মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা (Miliariya Profunda):-

মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা প্রজাতির ঘামাচি হল মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা প্রজাতির ঘামাচির তুলনায় কিছুটা বড় আকারের হয়। এই ধরণের ঘামাচির মধ্যে মাঝারি ধরণের সাদা জল মুখের দানা দানা ঘামাচি দেখতে পাওয়া যায়।

ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায়
ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায়

০৩) মিলিয়ারিয়া রুব্রা (Miliariya Rubra):-

মিলিয়ারিয়া রুব্রা (Miliariya Rubra) প্রজাতির ঘামাচি বাকি আর দুই প্রজাতির ঘামাচির তুলনায় সম্পুর্ন্য আলাদা। মূলত এই ধরণের ঘামাচি পুঁজ মুখের এবং কষ্টদায়ক হয়।

মিলিয়ারিয়া রুব্রা ঘামাচির মধ্যে ত্বকে লাল লাল ফুসকুড়ি দেখতে পাওয়া যায় এবং আমাদের শরীরে জ্বালা পোড়ার মত কষ্ট ও বেদনা দায়ক হয়। এই ধরণের ঘামাচির চুলকানি থেকেই শরীরের ত্বকের মধ্যে চুলকানির মত চর্ম রোগের সমস্যা দেখা যায়।

ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায়
ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায়

ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় ( Gorome Ghamachi Dur Korar Ghoroya Upay)

এতক্ষন আমরা ঘামাচি কেন হয়, ঘামাচি কি ও ঘামাচি কত প্রকার সেই বিষয়ে আলোচনা করলাম। এবারে আমরা ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে কথা বলব।

আপনারা আমাদের পরামর্শনুযায়ী খুব সহজেই নিজে নিজেই গরমে ঘরে বসেই ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় করতে পারেন। চলুন তাহলে গরমে ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলো নিয়ে কথা বলা যাক।

০১) ফিটকারী দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর উপায় (Ghamachi taranor ghoroya upay) :-

আপনারা জানেন সুপ্রাচীনকাল থেকে শুরু করে আজ অবধি ফিটকারী একটি অতি চমকপ্রদ এন্টিসেপ্টিক ঔষধি রূপে ব্যবহার হয়ে আসছে। আগেকার দিনে নাপিত ভাইয়েরা দাড়ি কাটার পর

কাটা জায়গায় ফিটকারী লাগত যাতে কাটা জায়গাটি সংক্রমিত না হয়। তবে ফিটকারী শুধু কাটা ছেঁড়া জায়গায় লাগালে ভালো কাজ দেয় এমন কিন্তু নয় ! ফিটকারী জল পরিশোধনের কাজে নোংরা জল পরিষ্কার করার কাজেও ব্যবহার করা হয়।

তাই আপনারা এই গরমকালে যারা ঘামাচির জ্বালা পোড়ার সমস্যায় ভুগছেন তারা ঘামাচিতে ফিটকারী মেশানো জল দিয়ে স্নান করেন, তাহলে ঘামাচির জ্বালা পোড়া থেকে উপশম পাওয়া যায় এবং খুব অল্পদিনের মধ্যেই ত্বক থেকে ঘামাচির প্রভাব কমে আসে।

০২) বরফ দিয়ে ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় (Ghamachi Dur Korar Ghoroa Upay) :-

গরমের দিনে বরফ খুব ভাল ঘামাচির জ্বালা পোড়া উপশমের কাজ করে। তাই আপনারা যারা ঘামাচির সমস্যায় ভুগছেন তারা একটি পরিষ্কার কাপড়ের মধ্যে বরফের কিউব (Ice qube) বেঁধে নিয়ে

ঘামাচির স্থান গুলোতে ০৫ থেকে ১০ মিনিট ঠান্ডা বরফের সেঁক দেন তাহলে দেখবেন ঘামাচির লাল ভাব দিন প্রতিদিন কমে আসছে এবং ঘামাচির জ্বালা পোড়া থেকেও উপশম পাচ্ছেন।

০৩) নিমপাতা দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর উপায়:-

নিমপাতার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান, তাই নিমপাতা দিয়েও আপনারা ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় করতে পারেন। এরজন্যে সবার প্রথমে আপনাকে একমুঠো পরিমানের নিমপাতা জোগাড় করে নিতে হবে।

পরে সেই নিমপাতা ভালো করে সিল নোড়ায় কিংবা মিক্সার গ্র্যান্ডিং মেশিনে পিষে থেঁতলে নিতে হবে। নিমপাতা থেঁতলে নিয়ে সেই নিমপাতা থেতলানো পেস্ট একটি পরিষ্কার পাত্রে ফ্রিজে রেখে দিন।

এবার নিয়ম করে স্নান করার আগে প্রতিদিন ঘামাচি ওয়ালা স্থান গুলোতে নিমপাতার পেস্ট লাগান। প্রতিদিন নিমপাতার পেস্ট লাগানোর পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে স্নান করে নিন, তাহলেই দেখবেন আপনি ঘামাচির সমস্যায় আরাম পাচ্ছেন।

০৪) মুলতানি মাটি দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় (Ghamachi taranor ghoroya upay) :-

ঘামাচির জ্বালা পোড়ন নিরাময়ে মুলতানি মাটি একটি খুব ভালো উপাদেয় হতে পারে। এর জন্য আপনাকে ০৩-০৪ চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে ০২-০৩ চামচ গোলাপ জল নিয়ে, মুলতানি মাটি ও গোলাপ জলের মিশ্রনে পেস্ট তৈরী করে

ঘামাচি হওয়া জায়গা গুলোতে ভালো করে লাগাতে হবে। তাহলেই দেখবেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার ঘামাচির জ্বালা পোড়ন কমে যাবে এবং আপনার গায়ের ঘামাচি দূর হয়ে যাবে।

০৫) বেসন দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়:-

আপনার রান্না ঘরে বেসন আছে নিশ্চয় ! তাহলে আর দেরি কেন, এখনই আপনি রান্না ঘর থেকে কয়েক চামচ বেসনের সঙ্গে পরিমান মত জল নিয়ে একটি লেপন তৈরী করে নিন।

তারপর সেই বেসনের লেপন আপনার ঘামাচি হওয়া জায়গা গুলোতে লাগান। এরপর মিনিট ১৫ মত বেসনের লেপন শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

তারপর বেসনের প্রলেপটি শুকিয়ে গেলে স্নান করে নিন। এইভাবে আপনি এক-দুই দিন বেসনের প্রলেপ লাগালেই খুব অল্পদিনের মধ্যেই ঘামাচির সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

০৬) আলু দিয়ে ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় ( Ghamachi Taranor Ghoroya upay) :-

আলুর রসের মধ্যে বহুবিধ ভেষজ উপাদান রয়েছে, তাই গরমে ঘামাচির সমস্যায়, আলুর ব্যবহার ঘরোয়া উপায়ে ঘামাচির সমস্যা দূর করার এক অব্যার্থ উপায় হিসাবে কাজে লাগতে পারে।

আলু দিয়ে ঘামাচির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে আপনাকে আপনার রান্নাঘর থেকে ০২-০১ টা মাঝারি সাইজের আলু নিয়ে গোল গোল চাকা চাকা করে কেটে নিয়ে সেই আলুর রস ঘামাচি হওয়া স্থান গুলোতে লাগাতে হবে।

আলুর রস ঘামাচি হওয়া জায়গা গুলোতে লাগাতেই আপনি ঘামাচি হওয়া জ্বালা পোড়া হওয়া জায়গা গুলোতে ঠান্ডার অনুভূতি পাবেন। এইভাবে নিয়ম করে ঘামাচি হওয়া জায়গা গুলোতে আলু কেটে আলুর রস লাগালে খুব অল্প দিনেই ঘামাচি থেকে মুক্তি পাবেন।

০৭) মুসুর ডালের সঙ্গে কাঁচা হলুদের মিশ্রণ দিয়ে ঘামাচি দূর করার উপায়:-

খোসা ছাড়ানো মুসুর ডাল এবং কাঁচা হলুদ একসাথে বেঁটে নিয়ে পেস্ট তৈরী করে ঘামাচি হওয়া স্থান গুলোতে লাগালে ঘামাচির জ্বালা পোড়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

০৮) ছোলার ডাল দিয়ে ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় (Ghamachi Taranor Ghoroya Upay) :-

রাত্রি বেলা ছোলার ডাল ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকাল বেলা সেই ডাল যদি সিল নোড়া কিংবা মিক্সি দিয়ে ভালো করে বেঁটে, ছোলার ডাল বাঁটা ঘামাচি হওয়া জায়গা গুলোতে লাগান তাহলে ঘামাচির জ্বালা পোড়ন থেকে উপশম পাবেন।

০৯) এলোভেরার রস দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় :-

এলোভেরার ভেষজ গুণাবলীর কথাতো আপনাদের অজানা নয় ! এলোভেরা বহুকাল আগে থেকেই বহুবিধ ঔষধি হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এলোভেরার রস দিয়ে ঘামাচি দূর করার জন্যে আপনাকে

এলোভেরার কান্ড থেকে দুটি পাতা কেটে নিয়ে সেই পাতাটিকে মাঝ বরাবর চিরে নিয়ে এলোভেরার জেল টুকুকে আলাদা করে নিতে হবে। তবে যাদের ঘরে এলোভেরার গাছ নেই তারা বাজারে উপলব্ধ এলোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন।

এলোভেরার জেল ফ্রীজের মধ্যে রেখে ঠান্ডা করে সেই ঠান্ডা জেল আপনি আপনার ঘামাচি যুক্ত ত্বকে লাগান তাহলে দেখবেন আপনার ঘামাচির জ্বালা পোড়া থেকে যেমন মুক্তি পাচ্ছেন তেমন আপনার ত্বকের ঘামাচি সেরে গিয়ে আপনার ত্বক আগের মত মসৃন হচ্ছে।

১০) ঘামাচি নিরাময়ে চন্দন ও গোলাপ জলের ব্যবহার:-

ঘরোয়া উপায়ে চন্দন দিয়ে ঘামাচি দূর করার জন্যে আপনাকে সবার প্রথমে পরিমানমত চন্দন পাওডার জোগাড় করে নিতে হবে। তারপর সেই চন্দন গুঁড়োর সাথে কয়েক চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করে নিতে হবে।

গোলাপ জলের সঙ্গে চন্দন গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করে নিয়ে সেই পেস্ট আপনাকে আপনার ঘামাচি হওয়া ত্বকের উপর লাগাতে হবে। এইভাবে দিন পাঁচেক চন্দন ও গোলাপ জলের প্রলেপ লাগালেই খুব অল্প সময়েই ঘামাচি নির্মূল হয়ে যাবে।

১১) শসা দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়:-

নিয়মিত শসা খেলে যেমন আমাদের শরীরে জলের স্বল্পতা দূর করে শরীরকে ডি-হাইড্রেট হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়, ঠিক তেমনি শসা কাঁটা আমাদের ঘামাচির চুলকানির সমস্যা গুলো দূরীভূত করে।

ঘামাচির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে শসা পাতলা ফালি ফালি করে কেটে নিয়ে আপনি, আপনার ঘামাচি হওয়া জায়গা গুলোতে লাগান। শসা কাটা গুলো ঘামাচির স্থান গুলোতে লাগালে আপনি ঠান্ডা অনুভূতি পাবেন।

যা আপনাকে ঘামাচির জ্বালা পোড়া থেকে মুক্তি দেবে। এছাড়াও আপনি শসাকে আরো একটি উপায়ে ব্যবহার করতে পারেন। তার জন্যে আপনাকে হাতের কাছে কয়েকটা লেবু রাখতে হবে।

সেই শসা গুলোকে থেঁতলে নিয়ে শসা থেঁতলানো ও লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে একটি পরিষ্কার কাপড়ে লেবু ও শসার রস মিশিয়ে নিয়ে ঘামাচির স্থান গুলোতে লাগাতে হবে, তাহলে দেখবেন ঘামাচির জ্বালা পোড়া থেকে মুক্তি পাবেন।

১২) তরমুজ দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়:-

পাকা লাল তরমুজ কার না খেতে ভালোলাগে, তবে তরমুজ যে শুধু গ্রীষ্মকালে তৃষ্ণাতের পিপাসা মেটায় শুধু এমন কিন্ত নয় ! তরমুজ কেটে তরমুজের লাল খোয়া ঘামাচিতে সেঁক দিলে ঘামাচির জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১৩) বেকিং সোডা দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর উপায়:-

যাদের শরীরে ঘামাচির সমস্যা আছে তারা স্নান করার আগে স্নানের জলের বালতিতে ০১ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিয়ে, তোয়ালে কিংবা গামছা ভিজিয়ে নিয়ে ঘামাচি ওয়ালা স্থান গুলোতে ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছলে ঘামাচির সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।

১৪) লেবুর রস দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর উপায়:-

লেবুর রসের মধ্যে রয়েছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা আমাদের ত্বকের চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে। এরজন্যে আপনাকে লেবু নিয়ে দুই টুকরো করে কেটে নিতে হবে।

তারপর সেই লেবুর টুকরো গুলো ভালো করে ঘামাচির জায়গা গুলোতে ঘষতে হবে। এইভাবে কয়েক দিন লেবু কেটে লেবুর রস ঘামাচির উপর লাগালেই ঘামাচি নির্মূল হয়ে যাবে।

১৫) ওটস দিয়ে ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায়:-

ঘামাচি মোকাবিলার জন্যে যাদের বাথ ট্যাব আছে তারা স্নান করার আগে বাথ ট্যাবে কয়কে চামচ ওটস ফেলে দিয়ে মিনিট ১৫ অপেক্ষা করার পর ওটস ভেজা জলে স্নান করুন।

আর যাদের ঘরে বাথ ট্যাব নেই তারা স্নানের জলের বালতিতে কয়েক চামচ ওটস ফেলে ভিজতে দিন, তারপর ওটস গুলো ভালোভাবে ভিজে গেলে ওটস ভেজানো জল দিয়ে স্নান করুন দেখবেন ঘামের দুর্গন্ধ ও ঘামাচির জ্বালা পোড়া থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।

ঘামাচি হলে কি করণীয় (Ghamachi hole ki koroniyo)

আপনারা যারা ঘামাচির সমস্যায় ভোগেন তাদের কতগুলো বিষয়ের উপর নজর রাখা উচিত। যেমন-

  • ঘামাচি হলে অযথা ত্বকের উপর কোনোভাবেই চুলকানোর চেষ্টা করবেননা। কারণ অনেক সময় নখ দিয়ে চুলকানোর ফলে ঘামাচির জায়গাগুলো সংক্রমিত হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
  • গরমের দিনে সবসময় ঢলঢলে সুতির পোশাক পরিধান করা উচিত। টাইট কাপড় পড়ে থাকলে ঘাম বসে গিয়ে ঘামাচি হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।
  • গরমে ঘামাচি হলে হুটহাট করে রাসায়নিক দ্রব্য ঘামাচির স্থানে ব্যবহার করা উচতি নয়। অতিরিক্ত পরিমান ঘামাচি হলে ট্যালকম পাওডার লাগাতে পারেন।

পরিশিষ্ট

ঘামাচির সমস্যা গরমের দিনে একটি উটকো সমস্যা বটে, যা গরমের দিনে সত্যিই অস্বস্তিকর। এতক্ষন আমরা ঘামাচি দূর করার ঘরোয়া উপায় নিয়ে কথা বললাম।

আপনারা যারা ঘামাচির সমস্যায় ভুগছেন তারা আমাদের আর্টিকেলে বর্ণনা করা ঘামাচি তাড়ানোর ঘরোয়া উপায় গুলো অবলম্বন করে খুব সহজেই নিজে নিজেই ঘামাচি তাড়ানোর উপায় করতে পারেন।

5/5 - (3 votes)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here