গণেশ চতুর্থী কি ? গণেশ চতুর্থী কেন পালন করা হয় (Ganesh Chaturthi keno palon kora hoy )

হিন্দু দেব ও দেবীদের মধ্যে সবার প্রথমে গণেশের পূজা করা হয়। আর এই জন্যই গণেশের আগে ‘শ্রী’ যুক্ত করে গণেশকে শ্রী গণেশ বলা হয়।

শ্রী গণেশ ভগবানের লীলা খেলায় গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি ? তার তাৎপর্য অন্তর্নিহিত আছে। গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজা কেন পালন করা হয় ? গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কিভাবে মর্তধামে প্রচলিত হল,

গণেশ পূজায় গণেশ মন্ত্র জপ করে গণেশ বন্দনা কেন করা হয় ? গণেশ পূজার ইতিবৃত্ত জানার জন্য গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজার প্রেক্ষাপটের দিকে চোখ বোলানো নেহাতই দরকার।

গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি (Ganesh Chaturthi ki)

হিন্দু ধর্মে গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজা কি ? এই নিয়ে এক আলাদা মান্যতা আছে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী প্রতিমাসে কৃষ্ণ পক্ষ এবং শুক্ল পক্ষের দুটো চতুর্থী থাকে।

প্রতিমাসে শুক্ল পক্ষের চতুর্থীর দিন গণেশ ভগবানের পূজা ও ব্রত রাখা যায়। ভাদ্র মাসে কৃষ্ণ পক্ষের অমাবস্যা পেড়িয়ে শুক্ল পক্ষের চতুর্থীতে নতুন চাঁদের জন্ম হয়।

ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের চতুর্থীর দিনটিকে গণেশের জন্মদিন হিসাবে ধরে গণেশ চতুর্থী বা বিনায়ক চতুর্থী পালন করা হয়। হিন্দু ধর্মনুযায়ী গণেশ ভগবান

গণেশ চুতুর্থীতে ভক্তদের কাঙ্ক্ষিত মনোবাঞ্ছা পূরণ করার জন্য মর্তধামে বিরাজিত হন। তাই ভারত তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা,

ভাদ্র মাসের বিনায়ক চতুর্থীকে গণেশ ভগবানের জন্মদিন হিসাবে ধরে ধুমধামের সহিত গণেশ চতুর্থী এবং গণেশ পূজার আয়োজন করে থাকে।

অবশ্যই পড়ুন : বিশ্বকর্মা কে ? বিশ্বকর্মা পূজা কেন করা হয়। 

গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা ২০২৩ (Ganesh Chaturthi 2023 Date and Time)

২০২৩ সালে ভাদ্রমাসে গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজার সময় সারণী (Ganesh Chaturthi 2023 Time Table)

২০২৩ সালে গণেশ পূজার তারিখ হল১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (সোম বার)
গণেশ পূজার শুভ মুহূর্ত (শুভ সময়)হিন্দু পঞ্জিকা মতে গণেশ পূজার শুভ সময় হল সকাল ১১ টা ০১ মিনিট থেকে দুপুর ০১ টা বেজে ২৮ মিনিট পর্যন্ত।
গণেশ পূজার মোট শুভ সময়গণেশ পূজার মোট শুভ সময় হল ০২ ঘন্টা ২৭ মিনিট।
গণেশ চতুর্থী ২০২৩
গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি
গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি

গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজা কেন পালন করা হয় 

ভাদ্র মাসে শুক্ল পক্ষের চতুর্থীর দিন গণেশের জন্মদিন হিসাবে গণেশ চতুর্থী উদযাপন করা হয়। একইভাবে প্রতিমাসের শুক্ল পক্ষের চতুর্থীর দিন গণেশের উপাস্যদিন ধরে বিনায়ক চতুর্থী পালন করা হয়।

ভাদ্র মাসে শুক্ল পক্ষের চতুর্থীতে অথাৎ গণেশ চতুর্থীতে গণেশের ভক্তরা অত্যন্ত নিষ্ঠা ও মর্যাদার সাথে ১০ দিন ধরে গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা করে থাকেন।

ভারতের মহারাষ্ট্রের মানুষ গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা খুব ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়। বিশেষকরে মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে বিভিন্ন সেলিব্রিটিদের ঘরে জাকজমকপূর্ণ্য গণপতি বন্দনা সবার নজর কাড়ে।

মহারাষ্ট্রের প্রধান উৎসব গণেশ পূজা শুধুই আজ মহারাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই,মহারাষ্ট্র ছাড়াও গুজরাত,কর্ণাটক,গোয়া প্রভৃতি রাজ্যে ধুমধামের সহিত গণেশ পূজা করা হয়।

গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজার নিয়ম বিধি 

প্রতিবছর ভাদ্রমাসের চতুর্থীতে পঞ্জিকা দেখে গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজার নিয়ম বিধি মেনে গণেশ পূজা করা হয়। হিন্দুধর্মালম্বী মানুষেরা গণেশ পূজার নিয়ম বিধি খুবই শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করেন।

গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজার নিয়ম বিধি অনুযায়ী,সর্বপ্রথমে যেখানে গণেশ চতুর্থী ও গণেশ পূজার জন্য মূর্তি স্থাপন করা হয় সেখানে ঈশান কোনে আলপনা ও রঙ্গোলি আঁকা হয়।

আলপনার উপর গণেশ মূর্তি বসানোর আগে কোনো টেবিল অথবা তক্তপোষ রেখে গণেশ মূর্তি স্থাপনের জন্য  গনেশজির বেদি তৈরী করা হয়।

গণেশজিকে বসানোর তক্তপোষ কিংবা টেবিলটাকে বেদি স্বরূপ লাল কিংবা হলুদ রঙের কাপড় দিয়ে মুড়ে ঢেকে দেওয়া হয়। বেদির উপর কলাপাতা দিয়ে পাঁচসিকে পয়সা,পান সুপারি সহযোগে

গণেশ ভগবানের মূর্তি বসানো হয়। এরপর গণেশ ভগবানের মূর্তির সামনে আমপাতা গঙ্গাজল সহ সিস ওয়ালা পাকা নারিকেল দিয়ে মাটির ঘট রাখা হয়।

ঘটের উপর সিঁদুরের স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে আতপ চালের নৈবদ্য ও ফুল বেলপাতা দিয়ে গনেশজির ঘট পূজা করা হয়। ঘটের মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হলে ঠাকুর মশায় গণেশ ভগবানের মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন।

এরপর ধান,দূর্বা,তুলসী,ফুল বেলপত্র দিয়ে গণেশ পূজা শেষ হলে গণেশ ভগবানকে ভোগ নিবেদন করা হয়। গণেশ ভগবানের অতিপ্রিয় প্রসাদ হল মোদক,তাই ভক্তরা গনেশজিকে মোদক ও লাড্ডূ নিবেদন করেন।

সমস্ত পূজকর্ম শেষ হলে স্বপরিবারে একসাথে গণেশ ঠাকুরের আরতি মন্ত্র জপ করে গনেশজির আরতি করা হয়। গণেশে পূজার ঘট গণেশ পূজার প্রথম দিন থেকে শুরু করে

পুরো ১০ দিন পূজা যাবৎ গনেশজির পূজা মণ্ডপে অচ্ছুত অবস্থায় রাখা থাকে। পূজার শেষে ১০ দিনের দিনে ঘট বিসর্জন দিয়ে নারিকেল ভেঙে ভক্তদের নারিকেলের প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

অবশ্যই পড়ুন : অকাল বোধন কি ? রামচন্দ্রের অকাল বোধন ও দুর্গাপূজার ইতিহাস। 

গণেশ ঠাকুরের আরতি মন্ত্র ( Ganesh Arati Mantra Bangla)

নিয়মিত গণেশ ভগবানের পূজা করে গণেশ ঠাকুরের আরতি মন্ত্র জপ করলে সব ধরণের বিঘ্ন নাস হয় এবং গণেশজি ভক্তদের মনবাঞ্ছা পূরণ করেন।

জয় গণেশ জয় গণেশ,জয় গণেশ দেবা 

মাতা জাকি পার্বতী,পিতা মহাদেবা। 

এক দন্ত দয়াবন্ত,চারভুজা ধারী। 

মাথেমে তিলক সোহে,মূষিক কি সবারি। 

 পান চড়ে ফল চড়ে আর চড়ে মেবা। 

লাড্ডূও কে ভোগ লগে,সন্ত করে সেবা। 

জয় গণেশ জয় গণেশ,জয় গণেশ দেবা 

মাতা জাকি পার্বতী,পিতা মহাদেবা। 

অন্ধে কো আঁখ দেতে  কোর্ডিন কো কাযা 

বাঁঝন ক পুত্র দে তো  নির্ধনকো মায়া 

সুর শ্যাম শরণ আয়ে সফল কিজে সেবা। 

মাতা জাগি পার্বতী পিতা মহাদেবা 

জয় গণেশ জয় গণেশ,জয় গণেশ দেবা 

মাতা জাকি পার্বতী,পিতা মহাদেবা। 

গণেশ বন্দনা মন্ত্র (Ganesh Bandana Mantra Bangla)

গণেশ চুতুর্থীর দিনে গণেশ বন্দনা মন্ত্র জপ করে শুরু হোক সকলের পথচলা। সমস্ত বিঘ্ন বাধা দূর করে সিদ্ধিদাতা গণেশ আপনাদের সকলের সহায় হোক। 

সুখহর্তা দুঃখহর্তা বার্তা বিঘনাচি।

নুর্বি পূরবী প্রেম কৃপা জয়াচি। 

সর্বাঙ্গী সুন্দর উঠি সিন্দুরাচি। 

কন্ঠী ঝরকে মাল মুক্তাফলাচি।০১.

জয় দেব জয় দেব জয় মঙ্গলমূর্তি 

দর্শনমাত্রে মনকামনা পূর্তি। 

রোথকচিত ফরা তুজ গৌরীকুমরা।

চন্দনাচি উঠি কুমকুমেশ্বরা। 

হিরে জড়িত মুকুট শোভাতো বরা। 

রুনঝুনতি নূপুরে চরণী ঘাগরিয়া।০২.

লম্বোদর পীতাম্বর ফনি বরবন্দনা। 

সরল সন্দে বক্রতুণ্ড ত্রিনয়না। 

দাস রামচা বাট পাহে সদনা। 

সঙ্কটি পবয়ে নির্ধারণী রক্ষাবে সুরবন্দনা। 

জয় দেব জয় দেব জয় মঙ্গলমূর্তি 

দর্শনমাত্রে মনকামনা পূর্তি। ০৩.

গণেশ চতুর্থীর ব্রতকথা (Ganesh  Chaturthi Brotokotha)

হিন্দুধর্মে পুরাণ অনুযায়ী গণেশ হল দেবতাদের মধ্যে সর্বাগ্রে পূজিত হওয়া হিন্দু দেবতা। পুরাণের কাহিনী অনুযায়ী গণেশ ভগবানের উৎপত্তি ও সৃষ্টি নিয়ে যেসমস্ত বিবরণ পাওয়া যায়,

তার মধ্যে পার্বতী পুত্র গণেশের গজানন হওয়ার কাহিনীটিই সর্বাধিক চর্চিত একটি কাহিনী। এছাড়াও পুরাণের কাহিনীতে গণেশের উত্থানের নানা বিধ ভিন্ন ভিন্ন কাহিনী শোনা যায়।

হিন্দু ধর্মে গণেশের পূজা সবার আগে করা হয় কেন 

শিবপুরাণের কাহিনী অনুযায়ী একবার মাতা পার্বতী নন্দী মহারাজকে দ্বারপাল নিযুক্ত করে স্নান করতে স্নান ঘাটে যায়। অতঃপর সেখানে মহাদেব উপস্থিত হলে নন্দীর আদেশ উপেক্ষা করে

মহাদেব পার্বতীর স্নান ঘাটে উপস্থিত হয়। মহাদেবের এহেন আচরণে দেবী পার্বতী প্রচন্ড অপমানিত বোধ করেন এবং রুষ্ঠ হন। এরপর দেবী পার্বতী তার প্রিয় সখি জয়া ও বিজয়ার পরামর্শে

পুকুরের মাটি তুলে একটি বালকের মূর্তি তৈরী করে মূর্তিটিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। মাটির মূর্তি প্রাণ পেয়ে কিশোর বালকের কায়া পায়।

মা পার্বতী তখন তার বিশ্বস্ত কিশোর বালককে দ্বারপাল নিযুক্ত করে বলেন স্নান ঘাটের দিকে কেউ এলে তাকে যেন বাধা দেওয়া হয়।

এইবলে মা পার্বতী স্নান ঘাটে স্নান করতে চলে যান। তার কিছুক্ষন পরে মহাদেব এসে মা পার্বতীর স্নান ঘাটের দিকে যেতে চাইলে কিশোর বালক ভগবান শিবকে বাধা দেয়।

এরপর বাদ বচসার মাধ্যমে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়, একে একে সমস্ত দেবতা যত সবাই গণেশের কাছে পরাজিত হয়। তখন মহাদেব ক্রোধিত হয়ে ত্রিশুল দিয়ে গণেশের শীরচ্ছেদ করে দেয়।

মা পার্বতী তার প্রিয় পুত্রের শিরচ্ছেদ দেখে পুরো ত্রিভুবন সংহারে উদ্যত হয়। দেবঋষি নারদ বুঝিয়ে সুঝিয়ে মা পার্বতীর ক্রোধ শান্ত করেন।

মা পার্বতী শান্ত হয়ে মহাদেবের কাছে তার প্রিয় পুত্র গণেশের শরীরে পুনঃরায় প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানায়। কিন্ত ত্রিশূলের আঘাতে ধর থেকে গণেশের মুন্ড ছিটকে গিয়ে

অনেক দূরে পড়ে গিয়েছিল তাই সঙ্গে সঙ্গে মুন্ড খুঁজে পাওয়া যায় না। মহাদেব তখন তার অনুচর নন্দী ভিঙ্গিকে মর্তধামে গিয়ে উত্তর দিকে মাথা করে শুয়ে আছেন এমন যে জীবের প্রথম দর্শন

পাবেন সেই জীবের মুন্ড কেটে আনার জন্য বলেন। নন্দী ভিঙ্গি মর্তধামে এসে প্রথমেই একটি হাতি শাবককে উত্তর দিকে মাথাকরে স্বয়নরত অবস্থায় দেখতে পায়।

এরপর হাতির মাথাটিকে কেটে পড়ে কৈলাসে নিয়ে আসা হয়। ভগবান শিব তখন হাতির মাথাটাকে গণেশের ধড়ের সঙ্গে জুড়ে পরে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়।

(ঘটনাক্রমে মহাদেব যেদিন নতুন করে গণেশের ধড়ে হাতির মাথা জুড়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেদিন ছিল ভাদ্রমাসের শুক্ল চতুর্থীর দিন। 

তাই ভক্তরা গণেশের নবজীবন লাভের দিনটাকে গণেশের জন্মদিন হিসাবে ধরে গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা করে থাকে ) এরপর ভগবান শিব গণেশকে নিজের পুত্র রূপে স্বীকার করে

সব দেবতার আগে গণেশের পূজা করার বিধান দেন। সেই থেকে আজ অব্ধি অন্যদেবতার পূজার শুরুতে প্রথমে গণেশের পূজা করা হয় তাই গণেশকে শ্রী গণেশ বলা হয়।

গণেশকে সংকট মোচন দুঃখহারি কেন বলা হয় 

পৃথিবীর মানুষ সহ সমস্ত দেবী দেবতাগণ একবার চরম সংকটের সম্মুখীন হন। তখন চরম সংকট থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য দেবতাগণ মহাদেবের স্মরনাপন্ন হয়।

মাতা পার্বতী তখন ভগবান শিবকে দেবীও দেবতাদের উপর আশা সঙ্কটমোচনের দায়িত্বভার কার্তিক ও গণেশের কাঁধে তুলে দিতে বলেন।

ভগবান শিব কার্তিক গণেশের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কার্তিক গণেশকে ডেকে বলেন তোমাদের দুজনের মধ্যে যে সর্বপ্রথম পুরো ব্রহ্মান্ড প্রদিক্ষন করে আসতে পারবে তাকেই আমি সংকট মোচনের ভার দেব।

মহাদেবের কথা শেষ হতে না হতেই কার্তিক যথা আজ্ঞা বলে তার বাহন ময়ূরের পিঠে চড়ে ব্রহ্মান্ড প্রদিক্ষনে বেড়িয়ে পরেন। কিন্ত গণেশ ততক্ষন পর্যন্ত চুপচাপ বসেই ছিল,

গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি
গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি

এবারে গণেশ উঠে পড়ে তার বাবা ও মা,শিব পার্বতীর চারিদিকে একবার ঘুরে এসে নিজের জায়গায় বসে পড়লেন। অপরদিকে কিছুক্ষনের মধ্যেই কার্তিক ব্রহ্মান্ড পরিক্রমা এলেন।

কার্তিককে ফিরে আসতে দেখে মহাদেব তখন গণেশকে ব্রহ্মান্ড পরিক্রম না করে বসে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন ? গণেশ তখন মহাদেবকে বললেন বাবা মায়ের চরণ তলেই তো সমস্ত ব্রহ্মান্ড লুটিয়ে আছে,

আর তিনি অনেক আগেই বাবা মায়ের চরণ প্রদিক্ষন করে নিয়েছেন তাতেই তার পুরো ব্রহ্মান্ড প্রদিক্ষন হয়ে গেছে,সুতরাং তার আলাদা করে ব্রহ্মান্ড প্রদিক্ষনের দরকার নেই।

মহাদেব গণেশের কাছ থেকে এহেন খুব সুন্দর উত্তর পেয়ে বেজায় খুশি হয় এবং সমগ্র ব্রহ্মান্ডের সংকট মোচনের দায়িত্ত্বভার গণেশের হাতে তুলে দেন।

এইজন্য ভক্তরা তাদের পরিবারের মঙ্গল কামনায় বাধা বিপত্তি সংকট থেকে নিজের পরিবারকে রক্ষা জন্য প্রতিমাসেই গণেশ ভগবানের জন্য উপবাস রেখে শুক্ল পক্ষে চতুর্থীর দিন গণেশ চতুর্থীর ব্রত পালন করেন।

অবশ্যই পড়ুন : ছট পূজা কি ? ছট পূজা কেন করা হয়। 

গণেশ চতুর্থীর ব্রতর কথার মহত্ব 

গণেশ পূজার মধ্যেই গণেশ চতুর্থীর ব্রতর মহত্ব অন্তনিহিত রয়েছে । তাইতো গণেশ চতুর্থীতে গণেশ পূজা করে গজানন সিদ্ধিদাতা গণেশকে প্রসন্ন করা হয়।

দৈনন্দিন জীবনে পারিবারিক সুখ শান্তি বজায় থাকার জন্য গণেশ চতুর্থী করা হয়। কোনো কোনো মহিলারা সন্তান প্রাপ্তির আশায় সিদ্ধিদাতা গণেশের পূজা করে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবসায়িক হালখাতা বদলের সময় এবং নতুন দোকান খোলার আগে সিদ্ধিদাতা গণেশের পূজা করা হয়। এছাড়া পরিবারে কারো বিবাহ অনুষ্ঠানের আগে গণেশ ভগবানের পূজা করা হয়।

গণেশ চতুর্থীর দিন হল গণেশের জন্মদিন এবং ঐ দিন গণেশ সারা ব্রহ্মান্ডকে সংকটের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন তাই ভক্তদের মান্যতা এই যে গণেশ চতুর্থীতে গণেশ পূজা করলে সমস্ত সংকট দূর হয়।

বিনায়ক চতুর্থীর ব্রত কথার মহত্ব 

গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি শুধু ভাদ্র মাসের শুক্ল চতুর্থীতে অনুষ্ঠিত হয়না। প্রতিমাসেই একটি করে শুক্লচতুর্থী থাকে,তাই প্রতিমাসের শুক্ল চতুর্থীতে গণেশ ভগবানের পূজা করা যায় এই চতুর্থীকে বিনায়ক চতুর্থী বলা হয়।

বিনায়ক চতুর্থীকে বরদ বিনায়ক চতুর্থীও বলা হয়। বরদ কথার অর্থ হল ‘ভগবানের সমীপে ভক্তের আকাঙ্খা পূরণ করার জন্য আবেদন করা।’

তাই কোনো ভক্ত যদি বিনায়ক চতুর্থীর ব্রত পালন করে তাহলে ভগবান গণেশ তার ভক্তদের ধীরস্থ ভাবে কৃপা লাভের আশীর্বাদ করেন।

মানবের মধ্যে বুদ্ধি এবং বিচারধারা দুটি গুন্ সর্বদা মানব জাতির কল্যাণকারী হিসাবে সাবস্ত হয়েছে। তাই বুদ্ধিমান গুণী জন ব্যক্তি সর্বদা নিজের জীবনে বিষম পরিস্থিতে কার্য সিদ্ধি করতে পারে।

গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি আরতি ভিডিও 

FAQ 

প্রশ্ন- গণেশ চতুর্থী ২০২৩ কবে (Ganesh Chaturthi 2023) ?

উঃ- গণেশ চতুর্থী ২০২৩ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর।

প্রশ্ন- গণেশ চতুর্থী কি ?

উঃ- গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা হল গণেশের জন্মদিন।

পরিশিষ্ট 

হিন্দু ধর্মালম্বি মানুষেরা গণেশ চতুর্থীকে গণেশের জন্মদিন হিসাবে পালন করে থাকে। তবে সিদ্ধিদাতা গণেশের পূজা শুধু গণেশ চতুর্থীর দিন করা হয় না,প্রত্যেক মাসের শুক্ল চতুর্থীতে গণেশ পূজা করা যায়।

তাই শুভ কাজের সূচনা সর্বদা ভগবান গণেশের গণেশ বন্দনা দিয়েই শুরু করা হয়। এইজন্য হিন্দু ধর্মে পবিত্রকর্মে লেখক তার লেখা শুরুর আগে শ্রী গণেশায় নমঃ লিখে থাকেন।

গণেশ চতুর্থী গণেশ পূজা কি ? আর্টিকেলে আমরা গণেশ চতুর্থী,গণেশ পূজার উপকরণ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করলাম,আশাকরি ভগবান গণেশ আপনাদের সহায় হবেন।

এই আর্টিকেল গুলোও পড়ে দেখুন –
5/5 - (2 votes)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here