জয় জয় বড় ঠাকুরের জয়। এই আর্টিকেলে আমরা বড় ঠাকুর শনিদেবের ব্রতকথা বাংলাতে,তুলে ধরার চেষ্টা করব। আপনারা যারা বড় ঠাকুর শনিদেবের আরাধনা করেন তাদের কাছে শনিদেবের ব্রতকথার এক আলাদা মহত্ব আছে।
শনিদেবের আরাধনায় শনি চালিশা, শনির পাঁচালী, শনিদেবের ১০৮ নাম ,জপ করা ব্রতীদের কাছে অনেক পূর্ন্যের কাজ। এমনিতেই যারা বড় ঠাকুরের আরাধনা করেন তাদেরকে অনেক নিয়ম পালন করতে হয়।
দেবতাদের মধ্যে শনিদেবকে গ্রহরাজ শনিদেব বলে সম্বোধিত করা হয়। শনিদেবের বক্রদৃষ্টি থেকে দেবতা,মানব,সুর,অসুর সবাই বাঁচতে চায়, কথায় বলে যার উপর একবার শনির বক্রদৃর্ষ্টি পড়ে তার ঘর অকল্যাণ হয়।
শনিদেবের প্রণাম মন্ত্র
ওঁ সৌরাষ্ট্রং কাশ্যপং শুদ্রং
সুয্যাস্যং চতুরঙ্গলম। কৃষ্ণং কৃষ্ণাম্বরং
গৃধ্র- গতং সৌরিং চতুর্ভুজম। তদ্ব দ্বা
বর – শুলং ধনু হস্তং সমাহ্বয়েৎ।
যমাধিদৈবতং প্রজা – পতিপ্রতধি
দৈবতম নমঃ নমঃ।।
ঔঁ ণীলাজ্ঞনচয়প্রখ্যং রবিসুনুং মহাগ্রহম্।
ছায়ায়া গভ‘সস্ততং বন্দে ভক্ত্যা শনৈশ্চরম্ নমঃ
-:শনি গায়ত্রী মন্ত্র:-
ওঁ কৃষ্ণাঙ্গায় বিদ্মহে রবিপুত্রায় ধীমহি তন্নঃ সৌরী প্রচোদয়াৎ

শনিদেবের ব্রতকথা বাংলা
শঙ্খপতি নামে এক বণিক নন্দন।
বিজয় নগরে বাস শুনা বিবরণ।।
শঙ্খপতি বাণিজ্যতে সদা ব্যস্ত হয়।
কিন্তু তেওঁর কোনোদিনে লাভত নরয়।।
একদিনা এশ নাও সাজাই-পরাই।
বাণিজ্যর উদ্দেশ্যেরে নদীয়েদি যায়।।
গঙ্গাপারত দেখে এক ব্ৰাহ্মণ কুমার।
এক মনে পূজা করে নাজোনোহে কার।।
বণিকে কাষলৈ গৈ সাদরে সুধিলে।
কোনজন দেবর পূজা তেওঁ আরম্ভিলে।।
ব্ৰাহ্মণে বুলিলে শুনা বণিক নন্দন
ভক্তি ভাবে করি আছো শনির পূজন।।
সদাগরে কয় প্ৰভু করো নিবেদন।
শুভ যদি হয় ময়ো করিম পূজন।।
বিপ্ৰই বোলে শনিবারে শনিক পূজিবা।
কৰ্বকাৰ্য্যে সিদ্ধি লাভ অবশ্যে করিবা।।
সদাগরে সোধে হে বিপ্ৰমণি।
কিনো বিধান আছে কোবা পূজিবলৈ শনি।।
শুনি বিপ্ৰ পূজাবিধি সব লেখি দিল।
সদাগরে শনি পূজা আরম্ভ করিল।।
নাও লৈ সদাগরে ফুরে দেশে দেশে।
বাণিজ্যত বহু লাভ হৈল ক্ৰমে ক্ৰমে।।
সদাগরর বাণিজ্যতে বহু লাভ হৈল।
কুবেরর দরে ধন বাঢ়িতে লাগিল।।
আত্মীয় স্বজন সৈতে মহা আনন্দতে।
ব্যস্ত থাকে সদাগর শনির পূজাতে।।
দেশে দেশে যায় সাধু বাণিজ্য কারণ।
শনির কৃপাতে লাভ হয় বহু ধন।।
যতে দিয়ে হাত তেওঁ লাভ হয় তাতে।
দিনে দিনে বাঢ়ে ধন শনির কৃপাতে।।
ধনগৰ্বত মত্ত হল সাধুর তণয়।
শনির পূজালৈ তেওঁর অবহেলা হয়।।
শনির পূজাত তেওঁর নাথাকিল মতি।
অমৃততে হল যেন গরল উত্পত্তি।।
বাণিজ্যর বাবে সাধু যি দেশত আছিল।
সিদেশতে রাজকোষত ডাকাইতি ঘটিল।।
চোরে আনি চুরি বস্তু সাধুকে বেচিলে।
অল্পমূল্যে বহু বস্তু সদাগরে পালে।।
একেবারে বহু বস্তু করিলে বেপার।
শংখপতির আনন্দত লাগে তোলপার।।
ছালনা করিলে শনি চোরাংচোবা হৈ।
ধনগৰ্বী বণিকক মজা দিলে গৈ।।
কতোবাল সবে কয় হের সদাগর।
ডকাইতিত ঘূরি ফুরে দেশ দেশান্তর।।
ডকাইত বুলি বণিকক করিলা বন্ধন।
রাজ দরবারত নি করালে দৰ্শন।।
রজাই দেখি কটোবালক কহিলে ক্ৰোধেরে।
হাত-ভরি বান্ধি তাক রাখা কারাগারে।।
রাজার আদেশ পালি সদাগরক নিলে।
হাত ভরি বান্ধি তাক কারাগারাত থলে।।
কারাগারত সদাগরে করি ক্ৰন্দন।
ধরিত্ৰীয়ে কয় শনিক করা আবাহন।।
শনিদেবের ব্রতকথায় শনিদেবের প্রতি সওদাগরের বিলাপ
কান্দি কান্দি সদাগরে শনি স্তব করে।
কত আছা শনিদেব রক্ষা করা মোরে।।
অশ্ৰুনির দেখি শনির দয়া উপজিল।
সদাগরর মুক্তির বাবে সত্তরে চলিল।।
সুখে নিদ্ৰা যায় রজা শয্যাত পরিয়া।
শনিয়ে স্বপ্নত কয় কানে কানে গৈয়া।।
সদাগর চোর নহয় অতিকে সজ্জন।
তার প্ৰতি এনে খং করা অকারণ।।
শিঘ্ৰে মুক্তি দিয়া তাক আদেশ করিলো।
অন্যথাই তোমারো ধ্বংশ নিশ্চয় করিলো।।
স্বপ্ন দেখি ভয়ে রজা কারাগারে যায়।
শংখপতি সদাগরক বিনয়েরে কয়।।
আনন্দেরে গুটি যোবা আপোন গৃহত।
বহু কষ্ট পালা তুমি দৈব বিপাকত।।
সদাগরে কয় রজা দোষ একো নাই।
শনির কোপত মোর হইছে বিলাই।।
রজার আদেশ লৈয়া সদাগর যায়।
শত সাধু সঙ্গে লৈয়া নৌকা চলায়।।
ভক্তি ভরে ভাবে সাধু শনির চরণ।
অতি শিঘ্ৰে নিজ দেশে দিলে দরশন।।
কৃহে আসি প্ৰথমতে পূজে শনৈশ্চর।
জ্ঞাতি বন্ধু সমবেত হৈল বহুতর।।
শনির হইল কৃপা সদাগরর প্ৰতি।
সুখ শান্তি বিরাজিলে গৃহত সম্পত্তি।।
প্ৰতি শনিবারে করে শনির পূজন।
সকলোবে মিলি করে শনির ভজন।।
শনির চরণে যেয়ে ভাবে একমনে।
সৰ্বদুখ দূর হয় বিপদর ক্ষণে।।
প্ৰতি শনিবারে যেয়ে শনিক পূজিব।
রোগ শোক দুখ তার সকলো গুছিব।।
শনির মাহাত্ম্য যেয়ে করিব শ্ৰবণ।
তার প্ৰতি নবগ্ৰহ সদা তুষ্ট হন।।
শনির পাঁচালী যদি রাখে ঘরে ঘরে।
শনিও সন্তুষ্ট হয় লক্ষী কৃপা করে।।
হরি হরি বোলা সবে যত বন্ধুগণ।
শনিদেবের ব্রতকথা হৈল সমাপন
এই আর্টিকেল গুলোও পড়ুন :