মিউচুয়াল ফান্ড কি,মিউচুয়াল ফান্ড কত প্রকার (Mutual fund Ki in Bengali)

মিউচ্যুয়াল ফান্ড কি (Mutual Fund Ki),হয়তো আমরা এখনো সবাই ঠিকঠাক বুঝিনা, অথচ আমরা প্রায়দিন টিভিতে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund) নিয়ে নানান ধরণের বিজ্ঞাপন দেখতে পায়।

তার সাথে Disclimer দিয়ে আমাদের সতর্ক করা হয় মিউচুয়াল ফান্ডে নিবেশ একটি ঝুঁকি পূর্ণ নিবেশ, মিউচুয়াল ফান্ডে নিবেশ করার আগে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ভালো করে পড়ার পর তবেই নিবেশ করুন।

আপনারা যারা মিউচুয়াল ফান্ড কি ঠিকঠাক ভাবে এখনো বোঝেন না,আমার বিশ্বাস তাদের জন্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ড কি ?আর্টিকেলটি মিউচুয়াল ফান্ড বোঝার জন্যে অনেক সহায়ক হবে।

আমরা এই আর্টিকেলে মিউচুয়াল ফান্ড কি,মিউচুয়াল ফান্ড কত প্রকার,মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সুবিধা,মিউচুয়াল ফান্ডের ইতিহাস ,মিউচুয়াল ফান্ডে কিভাবে বিনিয়োগ করবেন তার একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব।

মিউচুয়াল ফান্ড কি ? মিউচুয়াল ফান্ড হল এমন একটি সংস্থা, যারা বিভিন্ন ছোট বড় নাগরিকদের কাছ থেকে টাকা পয়সা একত্রিত করে stock,bonds এবং আরো অন্যান্য asset এর উপর বিনিয়োগ করে মুনাফা কামায়।

মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থার বিভিন্ন ফান্ডে নিবেশ করা সুচীকে holding (stocks, bonds,এবং আরো অন্যান্য assets) ঐ মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানির portfolio বলা হয়।

মিউচুয়াল ফান্ডের portfolio, মিউচুয়াল ফান্ডের asset ম্যানেজার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মিউচুয়াল ফান্ডে নিবেশ করলে fixed deposit, recaring deposit থেকে অনেক বেশি মুনাফা কামানো যায়।

মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার জন্যে রাশি রাশি টাকা পয়সার দরকার নেই, আপনি নূন্যতম প্রতিমাসে ৫০০ টাকা দিয়ে একটি মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারেন।

আজকের আর্টিকেলটিতে চলুন তাহলে আমরা এখন মিউচুয়াল ফান্ড কি এবং আমরা safely মিউচুয়াল ফান্ডে কিভাবে বিনিয়োগ করব সেই ব্যাপারে একটু সংক্ষিপ্ত ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করি।

Table of Contents

মিউচুয়াল ফান্ড কি ( Mutual Fund Ki Bangla)

বিভিন্ন বিনোয়োগকারীর থেকে পয়সা একত্রিত করে, একটি ফান্ডে বিনিয়োগ করার প্রক্রিয়াকে মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund) বলে। মিউচুয়াল ফান্ডে নিবেশককারীদের নিবেশ করা একত্রিত পয়সা,

একজন ফান্ড ম্যানেজার তার নিজস্ব তত্বাবধানে বন্ড এবং শেয়ার মার্কেটে নিবেশ করে মিউচুয়াল ফান্ডের ফান্ড, ম্যানেজ করে থাকেন। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের পয়সা ফান্ড ম্যানেজার ছোট ছোট ইউনিটে ভাগ করে দেয়।

এই ছোট ছোট ইউনিট গুলোকে NAV বলা হয়। সাধারণত একজন বিনিয়োগকারী মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার সময় সর্বদা মূলধন এবং expect return দেখেই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনোয়োগ করে থাকেন।

একজন বিনিয়োগকারীর কাছে মিউচুয়াল ফান্ডের return rate মিউচুয়াল ফান্ডের performense, previous year return, risk, portfolio management এবং market এর উপর নির্ভর করে।

সাধারণত দেখতে গেলে আমরা low risk এবং high risk এই দুই ধরণের মিউচুয়াল ফান্ড দেখতে পায়। low risk এর ফান্ড গুলোতে ঝুঁকি অনেক কম থাকে তাই এই সমস্ত ফান্ড গুলোতে রিটার্ন ও খুব অল্প পাওয়া যায়।

আবার একইভাবে একটি high risk mutual fund এর মধ্যে ঝুঁকি থাকে ঠিকই কিন্ত তাতে রিটার্ন ও অনেক বেশি পাওয়া যায়। সুতরাং সহজ সরল ভাষায় মিউচুয়াল ফান্ড হল একসাথে অনেক লোকের একত্রিত করা

টাকার সমন্বয়ে সংগঠিত একটি ফান্ড। যে ফান্ডের টাকা আলাদা আলাদা জায়গায় বিনিয়োগ করে নিবেশকদের অনেক বেশি return দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

মিউচুয়াল ফান্ড ফান্ড ম্যানেজার ( Mutual fund fund manager)

যে কোনো কোম্পানির ফান্ড ম্যানেজ করার দায়িত্বে থাকেন একজন professional fund manager, তার কাজ হল নিবেশকদের টাকা সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীকে অধিক থেকে অধিক return প্রদান করা।

সেরকম Mutual fund এর fund সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করার জন্যে একজন professional ব্যক্তিকে রাখা হয়। যিনি mutual fund কোম্পানির fund কে সঠিক জায়গায় নিবেশ করে portfolio ম্যানেজ করার কাজ করেন।

Mutual fund- এ, SEBI-র ভূমিকা

ভারতে Mutual fund কে SEBI (Security and Exchange Board of India) দ্বারা নিয়ন্ত্রন করা হয়। বাজারে যে সমস্ত Mutual fund কোম্পানি আছে তারা সবাই SEBI- এর রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত।

Mutual fund এ বিনিয়োগকারীর পয়সা SEBI তার নিয়মকানুনের দ্বারা বাজারে সুরক্ষিত রাখে। SEBI মার্কেটে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীর পয়সা চিটফান্ডের মত ধোখাদারির হাত থেকে সুরক্ষিত করে।

ভারতে বহুপূর্বেই mutual fund এর সূচনা হয়েছে, কিন্ত আজও অনেক মানুষ আছেন যারা মিউচুয়াল ফান্ড কি জিনিস সঠিকভাবে বুঝতে না পারায় মিউচুয়াল ফান্ডে নিবেশ করতে ভয় পায়।

তবে আজকাল ডিজিট্যাল যুগে ইন্টারনেটের দৌলতে সাধারণ মানুষের ধ্যান ধারণা পাল্টেছে, শুরুর দিকে বিত্ত শ্রেণীর লোকেরাই mutual fund এ বিনিয়োগ করত।

মিউচুয়াল ফান্ড কি
মিউচুয়াল ফান্ড কি

কিন্ত এখন মানুষ মুঠো ফোনের দৌলতে স্মার্ট ফোন দিয়েই খুব সহজে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারছে। তাই এখন mutual fund এ শুধু বড় লোকেরাই নয়, সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করছে।

তাই আপনার সামর্থের নাগালে বড় কোনো এমাউন্ট না থাকলেও মাসে শুধু ৫০০ টাকা কোনো ভালো portfolio এর mutual fund এ বিনিয়োগ করে আপনি আপনার ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় এমাউন্ট সঞ্চয় করতে পারেন।

মিউচুয়াল ফান্ডের ইতিহাস

১৯৬৩ সালে Resurve Bank of India এবং ভারত সরকারের তত্বাবধানে UTI (UNIT TRUST of India) গঠিত হওয়ার সাথে সাথে Mutual fund এর উদ্যোগ শুরু হয়।

ভারত সরকারের UTI গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় স্টক মার্কেটে ছোট ছোট বিনিয়োগকারীদের ধ্যান আকর্ষণ করে miutual fund এ নিবেশের পরিমান বৃদ্ধি করা।

১৯৬৩ সালের সংসদের অধিবেশনে UTI এর গঠন, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক দ্বারা করা হয়। শুরুরদিকে UTI ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের তত্বাবধানে পরিচালিত হত।

১৯৭৮ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে UTI কে আলাদা করে দেওয়া হয়। ভারতীয় শিল্প বাণিজ্যিক প্রগতিশীল ব্যাঙ্ক (IDBI) কে RBI এর জায়গায় Regulatory এবং administrative control করার অধিকার প্রদান করা হয়।

এরপর থেকে UTI ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে আলাদা হয়ে IDBI এর অধীন কাজ করা শুরু করে। ভারতে mutual fund এর প্রগতিকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।

যেমন- ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত প্রথম চরণে UTI এর কাছে ৬৭০০ কোটি টাকার ফান্ড একত্রিত হয়েছিল। তারপরে ১৯৮৭ সালে দ্বিতীয় চরণে mutual fund এর জগতে public sector ফান্ড এর আনাগোনা শুরু হয়।

যার ফলে public sector এর ব্যাঙ্ক গুলো তাদের নিজস্ব মিউচুয়াল ফান্ড বাজারে নিয়ে আসার সুযোগ পায়। State Bank of India তার প্রথম NONUTI mutual fund বাজারে নিয়ে আসে।

১৯৯৩ এর দশকে মিউচুয়াল ফান্ডের দৌড়ের দ্বিতীয় দশক শেষ হতে না হতেই AUM (Assets under management) ৬৭০০ কোটি টাকা টপকে ৪৭০০৪ কোটি টাকায় পৌঁছে যায়।

এইসময় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে mutual fund এ বিনিয়োগ করার প্রতি ঝোঁক অনেকটাই বেড়ে যায়। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত mutual fund এর তৃতীয় চরণের দৌড়ে

বাজারে private sector funds নিয়ে আসার অনুমতি দেওয়া হয়। তৃতীয় চরণে বিনিয়োগকারীরা বিকল্প হিসাবে আলাদা আলাদা বিকল্প mutual fund এ বিনিয়োগ করার সুযোগ পায়।

২০০৩ সালের পর থেকে মিউচুয়াল ফান্ডের চতুর্থ চরণ শুরু হয়। ২০০৩ সালে UTI কে দুইভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়, প্রথম SUUTI এবং দ্বিতীয় UTI mutual fund, যা বর্তমানে SEBI এর Mutual fund এর নিয়মনুসার পরিচালিত হয়।

২০০৯ সালে বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দার ঢেউ আছড়ে পড়লে,ভারতীয় বিনিয়োগকারীদিকে প্রচুর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। যার ফলে মানুষের মধ্যে থেকে mutual fund এর উপর থেকে আস্থা ক্রমশ নষ্ট হয়ে যায়।

কিন্তু যায় হোক ধীরে ধীরে বিশ্বের বাজারে আর্থিক মন্দার জের কেটে গিয়ে, ভারতীয় অর্থনীতিও ক্রমশ চাঙ্গা হতে দেখা যায়। ২০১৬ সালে AUM এর পরিমান রেকর্ড পরিমানে পৌঁছে যায়, সেইসময় AUM ১৫.৬৩ ট্রিলিয়ন টাচ করে যায়।

বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়গকারীর সংখ্যা ০৫ কোটির উপর পৌঁছে যায়। তার সাথে প্রতিমাসে আরো নতুন নতুন লক্ষ লক্ষ বিনিয়োগকারী মিউচুয়াল ফান্ডের সাথে যুক্ত হতে থাকে।

মিউচুয়াল ফান্ড কত প্রকার

বাজারে বহু ধরণের মিউচুয়াল ফান্ড উপলব্ধ আছে,তবে আমরা মিউচুয়াল ফান্ড কত প্রকার বললে প্রধানত মিউচুয়াল ফান্ডকে ০২ টি ভাগে ভাগ করতে পারি- A) গঠনগতভাবে (structure), B) অ্যাসেট (asset) এর উপর।

A) গঠনগতভাবে (Structure base Mutual Funds)

  • Open Ended Mutual Fund
  • Close Ended Mutual Fund
  • Interval Funds

Open Ended Mutual Fund

এই সমস্ত মিউচুয়াল ফান্ড গুলোতে বিনিয়োগকারীরা তার নিজের মত, যখন খুশি ফান্ড কেনা বেচা করতে পারে। এই সমস্ত ফান্ড গুলোতে টাকা তোলার জন্যে কোনো লকিং পিরিয়ড থাকেনা।

বিনিয়োগকারী নির্ধারিত সময়ের আগে পরে যখন খুশি তার মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা টাকা তুলতে পারে, তাই এই ধরণের মিউচুয়াল ফান্ড গুলোকে ওপেন এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ড বলা হয়।

Close Ended Mutual Fund

এই ধরণের ক্লোজ ইন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ড গুলোতে বিনিয়োগকারীরা যখন তখন বিনিয়োগ করতে পারেনা। শুধুমাত্র যখন নিউ ফান্ড অফার (NFO) করা হয় তখন এই সমস্ত ফান্ড গুলোতে বিনিয়োগ করা যায়।

এই ধরণের Close Ended Mutual Fund গুলোতে ০৩ থেকে ০৫ বছরের লকিং পিরিয়ড থাকে। এই লকিং পিরিয়ডের মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ড গুলো বিক্রি করা যায় না।

Interval Fund

এইধরণের মিউচুয়াল ফান্ড গুলো Open Ended Mutual Fund এবং Close Ended Mutual Fund দুই ধরণের মিউচুয়াল ফান্ড মিক্সআপ করে তৈরী করা হয়েছে।

এইধরণের ফান্ড গুলোর সময়সীমা মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পনি গুলো দ্বারা নির্ধারণ করা হয়। এই ধরণের ফান্ড গুলোও ক্লোস এন্ডেড ফান্ডের মত যখন খুশি তখন বিক্রি করা যায়না।

B) অ্যাসেট অনুযায়ী মিউচুয়াল ফান্ড

  • Debt Funds
  • Liquid Mutual Funds
  • Equity Funds
  • Money Market Funds
  • Balanced Mutual Funds

Debt Funds

এই ধরণের ফান্ডে গুলোতে বিনিয়োগের রিস্ক অনেকটা কম থাকে। Debt fund এর বিনিয়োগের টাকা মূলত Goverment bond এ বিনিয়োগ করা হয়।

তাই এই ধরণের ফান্ড গুলিতে বিনিয়োগ করলে অনেক কম ঝুঁকি থাকে। Debt funds এ ০২ থেকে ০৫ বছরের জন্যে নিবেশ করে আপনি শতকরা ১০ % এর উপর রিটার্ন আশা করতেই পারেন।

(আরো পড়ুন : ক্রিপ্টোকারেন্সি কি, ক্রিপ্টোকারেন্সি কত প্রকারের)

Liquid Mutual Funds

স্টক মার্কেটে যত ধরণের মিউচুয়াল ফান্ড আছে তার মধ্যে সবথেকে নিরাপদ ফান্ড হল Liquid Mutual fund, তাই এইধরণের ফান্ড গুলোতে নির্দ্বিধায় বিনিয়োগ করা যায়।

Liquid mutual fund এর মূলধনের টাকা মূলত বিভিন্ন ধরণের গভর্মেন্ট সিকিউরিটি, মানি মার্কেট,কমার্সিয়াল পেপার ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করা হয়।

Liquid Mutual Fund এ বিনিয়োগ করার একটা প্লাস পয়েন্ট হল আপনি আপনার বিনিয়োগ করার টাকা ০১ দিন থেকে শুরু করে ০১ বছর বা ০২ বছরের যে কোনো সময় তুলতে পারেন।

যদিও অনেক কম সময়ের জন্যে এই সমস্ত ফান্ড গুলোতে বিনিয়োগ করা হয়, তবুও এত কম সময়ের মধ্যেও ০৮ থেকে ১০ % রিটার্ন আশা করা যায়।

Equity Funds

আপনি যদি আপনার ভবিষ্যতের কথা ভেবে একটি লংটার্ম ইনভেস্ট প্লানের কথা চিন্তা করছেন, তাহলে আপনার জন্যে সবথেকে শ্রেয় হল Equity Funds.

Equity Funds এর টাকা ফান্ড ম্যানেজাররা সরাসরি স্টক মার্কেটের কোনো কোম্পানির শেয়ারে নিবেশ করে। তাই এই ধরণের ফান্ডে কম সময়ের জন্যে নিবেশ করা মানে ঝুঁকি পূর্ণ একটি কাজ।

তাই যারা লংটার্মের কথা চিন্তা করে বিনিয়োগ করতে চান তাদের জন্যে Equity funds একটি বিকল্প ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান হতে পারে। কারণ দীর্ঘ্য সময়ের ব্যবধানে এই সমস্ত ফান্ডে টাকা নিবেশ করে রাখলে স্টক মার্কেটের গ্রাফ ওঠা নামা করলেও

মোটামোটি মাঝামাঝি গড় একটা রিটার্ন আপনারা আশা করতেই পারেন। আপনি যদি কোন একটি Equity fund এ মিনিমাম ০৫ বছরের জন্যে বিনিয়োগ করেন তবে এই ধরণের ফান্ড গুলো থেকে আপনি গড়ে ১৫ % রিটার্ন আশা করতেই পারেন।

Money market funds

Money Market Fund এ বিনিয়োগ করলে অনেক কম সময়ে রিস্ক ফ্রী ভাবে অনেক বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। তাই আপনার একাউন্টে যদি কোনো টাকা অতিরিক্ত ভাবে পড়ে থাকে

তাহলে আপনি Money market fund গুলোতে ০১ মাস থেকে ০২ মাসের জন্যে বিনিয়োগ করে অনেক কম সময়ে ব্যাঙ্কের দেওয়া সুদের থেকে অনেকটাই বেশি রিটার্ন আশা করতে পারেন।

money markets funds গুলো বাজারে অনেক সুরক্ষিত জায়গায় বিনিয়োগ করে, যা থেকে আপনি অনেক কম সময়ে ০৪ থেকে ০৬ % এর মধ্যে রিটার্ন আশা রাখতে পারেন।

Balance Funds

balance funds হল মূলত সমস্ত fund এর মিশ্রনে তৈরী একটি ফান্ড। এই ফান্ড গুলোতে debt, money market, Liquid,Equity সব ধরণের ফান্ড মিক্স থাকে।

এই ধরণের ফান্ড গুলো মিক্সআপ করে মোটামোটি সমস্ত জায়গাতেই বিনিয়োগ করা হয়। তাই এই ধরণের ফান্ডে বিনিয়োগ করলে সেরকম কোনো ঝুঁকি থাকেনা।

এই ধরণের ফান্ড গুলোর কোনটা,বেশি রিটার্ন দেয় তো, আবার কোনটা কম রিটার্ন দেয়। তাই এই সমস্ত ফান্ডের কোনো একটা শেয়ার লস হলেও, অপর একটি শেয়ার থেকে মুনাফা কামানো যায়।

যার ফলে এই ধরণের মিউচুয়াল ফান্ড গুলোতে নিবেশে ঝুঁকি থাকলেও বিগড়ে যাওয়ার ভয় থাকেনা লাভ ও লস মিলিয়ে ব্যালেন্স বজায় থাকে।

মিউচুয়াল ফান্ড কি হালাল

মিউচুয়াল ফান্ড হালাল কি হারাম সঠিকভাবে তা বলা খুব মুশকিল। কেননা সব জিনিসের ভালো এবং মন্দ দুটো দিক থাকে। সাধারণভাবে ইসলাম ধর্মনুসারে মিউচুয়াল ফান্ড হালাল না হারাম,

বিচার করে দেখলে দেখতে পাওয়া যায়,মিউচুয়াল ফান্ডে আগে থেকেই মোটামোটি সুদের পরিমান নির্দিষ্ট করা থাকে। আর ইসলাম শরীয়া আইনে কোনো কিছুতে সুদ যদি আগে থেকে নির্ধারণ করা থাকে তাহলে তা হারাম।

তবে আপনি মিউচুয়াল ফান্ডের সুদকে ঘুরিয়ে,পেঁচিয়ে লভ্যাংশের সঙ্গে যদি তুলনা করেন,তাহলেও কিন্তু তা সুদের পর্যায়েই পড়ে তাই ইসলাম ধর্মে মিউচুয়াল ফান্ড কখনই হালাল নয়।

মিউচুয়াল ফান্ডে কিভাবে বিনিয়োগ করব

আজকালকার দিনে মার্কেটে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার বহু প্লাটফর্ম আছে। আপনার স্মার্ট ফোনের এন্ড্রয়েড ও আইওস প্লাটফর্মের মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের মোবাইল এপ্লিকেশন দিয়ে,সহজেই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন।

যেমন- Grow, Zerodha,Upstox, Paytam money,Angel Broker প্রভৃতি এপ্লিকেশন গুলো দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা যায়।

এই সমস্ত মিউচুয়াল ফান্ডে নিবেশের প্লাটফর্ম গুলোর মধ্যে Grow হল সবথেকে সহজ ও সরল মিউচুয়াল ফান্ডে নিবেশ করার অন্যতম প্লাটফর্ম। এখানে খুব স্বল্প পরিমানে ব্রকেজ চার্জ দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ড কেনা বেচা করা যায়।

(আরো পড়ুন : বিটকয়েন কেনা বেচা কিভাবে করবেন)

মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের প্রকারভেদ

মিউচুয়াল ফান্ড সাধারণত দুইভাগে ভাগ করা যায় –

  1. SIP (Systematic Investment Plan)
  2. Onetiem lump sum Investment

০১. SIP (Systematic Investment Plan)

SIP হল এমন এক প্রকারের মিউচুয়াল ফান্ড ইনভেস্টমেন্ট পক্রিয়া যেখানে,আপনার রুচিমত নির্ধারিত একটা এমাউন্ট মাসের একটা নির্দিষ্ট দিনে আপনার রেজিস্টার ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে ডেবিট হয়ে যায়।

যেমন- আপনি যদি প্রতিমাসে ১৫ তারিখে ১০০০ টাকার একটি SIP খুলেন, তাহলে সেই নির্দিষ্ট দিনে আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে আপনার মিউচুয়াল ফান্ডের একাউন্টে

আপনার নির্ধারণ করা এমাউন্ট হিসাবে ১০০০ টাকা কেটে নিয়ে আপনার মিউচুয়াল ফান্ড একাউন্টে জমা হয়ে যাবে। আর যা পরে গিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে আপনি একটা মোটা এমাউন্ট হিসাবে আপনি আপনার টাকা ফেরত পাবেন।

০২. Onetime lump sum Investment Plan

অনটাইম ল্যাম্প সাম ইনভেস্টের জন্যে বিনিয়োগকারীকে একসাথে মিনিমাম এমাউন্ট হিসাবে সবথেকে কম ৫০০০০ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়।

তবে ইনভেস্টর চাইলে এর থেকে অনেক বেশি এমাউন্ট একসাথে lump sum এমাউন্ট হিসাবে ইনভেস্ট করতে পারে। তাই এই ধরণের এমাউন্টকে Onetime lump sum Investment plan বলা হয়।

মিউচুয়াল ফান্ড কি

সেরা কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ড

বাজারে অনেকধরণের মিউচুয়াল ফান্ড উপলব্ধ আছে, আমরা এখানে পারফর্মেন্সের নিরিখে কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ডের সূচি তুলে ধরলাম আপনারা এই সমস্ত ফান্ড গুলো একবার দেখতে পারেন-

  • এক্সিস ব্লু চিপ ফান্ড
  • এক্সিস মিড্ ক্যাপ ফান্ড
  • কোটাক স্ট্যান্ডার্ড মাল্টিকাপ ফান্ড

মিউচুয়াল ফান্ডের সুবিধা (Mutual Benefits in Bangla)

বর্তমানে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার পরিমান দিন প্রতিদিন বেড়েই চলেছে,কারণ মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে সাধারণ ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ করার থেকে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যায়।

০১. Profesional Management

আপনার দ্বারা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা পয়সা একজন এক্সপার্ট ফান্ড ম্যানেজারের তত্বাবধানে ম্যানেজ করা হয়, যাতে করে আপনি আপনার বিনিয়োগ করা রাশির উপর বেশি বেশি করে মুনাফা অর্জন করতে পারেন।

০২. Diversification

একজন ইনভেস্টরের বিনিয়োগ করার মূল মন্ত্র হল, বিনিয়োগ করা টাকা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ইনভেস্ট না করে আলাদা আলাদা ভাবে পৃথক জায়গায় নিবেশ করা।

আলাদা আলাদা জায়গায় টাকা নিবেশ করলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। কোনো এক জায়গায় কম রিটার্ন পাওয়া গেলেও আরো অন্যান্য জায়গা থেকে ভালো রকম রিটার্ন পাওয়া যায়।

০৩. Variety

এখনকার দিনকালে মানুষ কোনো না কোনো ভাবে একই ধরেনর ইনভেস্ট প্ল্যানের উপর নির্ভরশীল না থেকে বিকল্প ইনভেস্টমেন্টের জায়গা খুঁজতে থাকে। পাবলিক যেখানে সবথেকে সুরক্ষিত

এবং ভালো রিটার্ন পাওয়া যাবে বলে মনে হয়,পাবলিক সেখানে বিনিয়োগ করার পন্থা খোঁজে। মিউচুয়াল ফান্ড প্লাটফর্ম হল এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে একসাথে বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করার বিকল্প পাওয়া যায়।

০৪. Convenience

মিউচুয়াল ফান্ডে খুব সহজ ও সরল পক্রিয়ায় যেমন ইনভেস্ট করা যায়,ঠিক তেমন করেই খুব সহজভাবেই পয়সা বার করা যায়। বর্তমানে অনলাইন এবং অফলাইন দুই জায়গা থেকেই মিউচুয়াল ফান্ড কেনা বেচা করা যায়।

০৫. Affordable

সাধারণভাবে যারা বড় কোম্পানির শেয়ারে ইভেস্টমেন্ট করতে চায় কিন্ত অনেক সময় বাজেট কম থাকার জন্যে তারা তাদের মনমত বড় কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারেনা।

কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানি আমাদের বিনিয়োগের টাকা একত্রিত করে বড় বড় কোম্পনিতে নিবেশ করে আমাদের বড় রিটার্ন কমানোর সুযোগ করে দেয়।

০৬. Tax Benefit

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে আমাদের শেয়ার কেনা বেচা করার জন্যে সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়। কিন্তু Mutual fund এর Tax Benifit Fund গুলোতে বিনিয়োগ করলে ট্যাক্স রিবেট পাওয়া যায়।

নোট : মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার সময় অবশ্যই আমাদের যাবতীয় ডকুমেন্ট চেক করে পড়ে নেওয়ার পর তবেই আমাদের মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত।

FAQ

প্রশ্ন- মিউচুয়াল ফান্ড মানে কি ?

উঃ- মিউচুয়াল ফান্ড হল স্টক,বন্ড এবং অন্যান্য জায়গায় একত্রিত একটি নিবেশ পক্রিয়া। মিউচুয়াল ফান্ডের কোম্পানি দ্বারা পাবলিকের কাছে ফান্ড একত্রিত করে, ফান্ড ম্যানেজারদের দ্বারা সেই পয়সা ছোট ছোট বন্ড, স্টক এবং এই ধরণের আরো বিভিন্ন জায়গায় নিবেশ করে পাবলিককে তার মূলধনের রাশি লভ্যাংশ সহ ফেরত দেওয়া হয়।

প্রশ্ন- মিউচুয়াল ফান্ড কিভাবে কাজ করে ?

উঃ- মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানি পাবলিকের কাছ থেকে পয়সা একত্রিত করে, একজন অভিজ্ঞ ফান্ড ম্যানেজার দ্বারা সেই পয়সাকে বিভিন্ন কোম্পানির বড় বড় শেয়ারে ইনভেস্ট করে। পরে ইনভেস্টমেন্ট এমাউন্টের উপর যে লভ্যাংশ পাওয়া যায় সেই পাবলিককে তার মূলধন (+/- লভ্যাংশ/লস) ফেরত করা হয়।

পরিশিষ্ট

মিউচুয়াল ফান্ড কি (Mutual fund) আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাদের, মিউচুয়াল ফান্ড কি এবং মিউচুয়াল ফান্ড কিভাবে কাজ করে তার একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম।

আশাকরি আপনারা মিউচুয়াল ফান্ডের কনসেপ্ট কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন। তাই আমার বিশ্বাস আপনারা এখন নিজে নিজের ভালো মন্দ বিচার করে একটি ভালো মানের পোর্টফোলিও যুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে চাইলে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

5/5 - (2 votes)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here