বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয় ও বিশ্বকর্মা পূজা ২০২৩ (Biswakrma Puja 2023)

বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে বিশ্বকর্মা পূজা হল একটি মহাপার্বণ। বিশ্বকর্মা পূজার ইতিহাস, বিশ্বকর্মা কে ও বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয় এই বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে নানাবিধ প্রশ্ন থাকতেই পারে।

তবে বিশ্বকর্মা ঠাকুরকে মূলত কলকারখানার দেবতা বলেই পূজা করা হয়। তাই ভারতের মত ধর্মসহিষ্ণু দেশে ছোট বড় প্রতিটি কলকারখানায় বিশ্বকর্মা পূজা বেশ ধুমধাম করেই উদযাপন করা হয়।

ভারত,বাংলাদেশে ও নেপালের মত দেশ গুলিতে স্থানভেদে ১৬ অথবা ১৭ ই সেপ্টেম্বর এই দুটি তারিখের মধ্যে বিশ্বকর্মা পূজার আয়োজন করা হয়।

তাই অনেকের মধ্যে বিশ্বকর্মা পূজা কবে ? এটা একটা বিরাট প্রশ্ন চিহ্ন হয়ে সামনে আসে। বিশ্বকর্মা পূজার ইতিহাস অনুসরণ করলে দেখতে পাওয়া যায়,

হিন্দু পঞ্জিকায় দেবী ও দেবতাদের পূজার তারিখ প্রতিবছর চন্দ্রের অবস্থান ভেদে নির্ধারিত হয় এবং সময়ের বিবর্তনে প্রতি বছর পরিবর্তন হতে থাকে।

তবে বিশ্বকর্মা পূজায় একমাত্র পূজা যা চন্দ্রের অবস্থান ভেদে তারিখ ও দিন দ্বারা নির্ধারিত না হয়ে সূর্যের অবস্থানের উপর নির্ধারণ করা হয়।

হিন্দু দেবদেবীরা সূর্যের উত্তরায়নের সময় ছয় মাস ঘুমের মধ্যে থাকে আবার সূর্যের দক্ষিণায়ন কালে দেবী দেবতাদের ঘুম থেকে জাগার সময় হয়।

যার জন্য শ্রী রাম চন্দ্রকে দেবী দুর্গাকে অসময়ে জাগিয়ে অকাল বোধন করতে হয়েছিল। পঞ্জিকায় সূর্য সংক্রান্ত দিক গণনায় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশীর দিন থেকে

সূর্যের দক্ষিণায়নকাল গণনা করা হয়। সূর্যের দক্ষিণায়নকালে দেবতারা তাদের ছয় মাস নিদ্রাবস্থা পুরো করার পর ঘুম থেকে জেগে ওঠেন এবং নিয়মমাফিক সূর্যের দক্ষিণায়নকালেই বিশ্বকর্মা পূজার প্রথম আয়োজন করা হয়।

বিশ্বকর্মা কে (Biswakrma ke)


বিশ্বকর্মা কে ? তাহলে আসুন বিশ্বকর্মা কে ? এই প্রশ্নের জবাবে কিছু বলা যাক। হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষের বিস্বাসনুযায়ী বিশ্বকর্মা ঠাকুর হলেন নির্মাণের দেবতা।

তাই বিশ্বকর্মা ঠাকুরকে আপনারা একজন বাস্তুকার বা মাস্টার ইঞ্জিনিয়ার বলতে পারেন। মাস্টার ইঞ্জিনিয়ার এই জন্যই বলছি কারণ তিনি শুধু কোনো বিশেষ ধরণের একই রকমের নির্মাণ কার্যেই পটু ছিলেন না।

বিশ্বকর্মা ঠাকুর বিভিন্ন দেবী ও দেবতাদের প্রাসাদ,যুদ্ধের অস্ত্র ও শস্ত্র ছাড়াও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দ্বারিকা নগরী,পাণ্ডবদের ইন্দ্রপ্রস্থ শহর,

রাবনের পুস্পক রথ ও সোনার লঙ্কা নগরী বিশ্বকর্মা ঠাকুর নিজের হাতে গড়েছিলেন। তাই হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষেরা সৃজনশীল বিশ্বকর্মা ঠাকুরকে শ্রদ্ধা ও ভক্তিভরে নির্মাণের দেবতা হিসাবে পূজা করে।

অবশ্যই পড়ুন : রাম চন্দ্রের অকাল বোধন ও দুর্গাপূজার ইতিহাস। 

বিশ্বকর্মা পূজা ২০২৩ (Biswakarma puja 2023)


এবারের প্রশ্ন হল ২০২৩ সালে বিশ্বকর্মা পূজা কবে বা বিশ্বকর্মা পূজা ২০২৩ সালে কত তারিখ। আগেই বলেছি বিশ্বকর্মা পূজায় হল একমাত্র পূজা যা হিন্দু শাস্ত্রে চন্দ্রের অবস্থান ভেদে দিক নির্ধারণ না হয়ে

বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয়
বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয়

সূর্যের গতি প্রকৃতির উপর নির্ভর করে সূর্যের দক্ষিণায়ন কালে অথাৎ দেবী ও দেবতাদের জাগরণের প্রথমেই আশ্বিন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশীর দিন বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়।

বিশেষ করে যে সমস্ত মানুষ কলকারখানা অথাৎ যান্ত্রিক পেশার সঙ্গে যুক্ত তারা বিশ্বকর্মা ঠাকুরের কাছে তাদের কর্মে ও শ্রমে বিশ্বকর্মা ঠাকুরের কৃপা লাভের আশায় ধুমধামের সহিত বিশ্বকর্মা পূজা করে থাকে।

বিশ্বকর্মা পূজা ২০২৩ সালে সূর্যসিদ্ধান্ত দিক গণনানুযায়ী ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা ঠাকুরের পূজা করা হবে। তবে বিশ্বকর্মা পূজা স্থানভেদে কোথাও ১৬ ই সেপ্টেম্বর আবার কোথাও ১৭ ই সেপ্টেম্বর হয়ে থাকে।

এবারে স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের মনে একটা জিজ্ঞাসা কাজ করে আসলে কি এমন কারণ আছে যার জন্য প্রতিবছর ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখেই বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়।

আর কেনই বা অন্য দেবী ও দেবতাদের পূজার দিন ক্ষনে পরিবর্তন দেখতে পাওয়া গেলেও বিশ্বকর্মা পূজার দিন ক্ষনে কোন পরিবর্তন হয় না।

১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয়


হিন্দু ধর্মে বিশ্বকর্মা পূজার তারিখ নিয়ে ১৬ ও ১৭ এর দ্বন্দ লেগেই থাকে। তবে সাধারণত ১৭ ই সেপ্টেম্বর তারিখেই বেশিরভাগ বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়।

১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা কেন পালন করা হয় এই নিয়ে হিন্দু ধর্মে বেশ কতগুলো মতভেদ দেখতে পাওয়া যায়। অনেকের মতে ১৭ ই সেপ্টেম্বর প্রতিপদ তিথিতে

বিশ্বকর্মা ঠাকুরের জন্ম হয়েছিল তাই ১৭ ই সেপ্টেম্বরকে বিশ্বকর্মা ঠাকুরের জন্মদিন হিসাবে ধরে ঐ দিন বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়।

অবশ্যই পড়ুন : ২৫ শে ডিসেম্বর বড়দিন কেন পালন করা হয়। 

বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয় 


পুরানের কাহিনী অনুসারে ব্রহ্মা পুত্র ধর্ম-র বিবাহ বস্তু-র সঙ্গে সম্পন্ন হয়। বস্তু-র সাত জন পুত্র ছিল তার মধ্যে সপ্তম পুত্রের নাম বাস্তু রাখা হয়।

বাস্তু দেবতা একজন শিল্পকর্মে সুক্ষ হস্ত এবং দক্ষ ভাস্কর্য্য শিল্পী ছিলেন। পরে বাস্তু দেবতার এক পুত্র সন্তান হয় এবং সেই পুত্র সন্তানের নাম রাখা হয় বিশ্বকর্মা

বাস্তু দেবতার এই মানস পুত্র শিল্পকর্মে নিপুন ভাস্কর্য্য নির্মাণের এক অদ্বিতীয় কারিগর। পরে বাস্তু দেবতার পুত্র তার নির্মাণ কলা বিধির দৌলতে বিশ্বকর্মা ঠাকুর নামে পরিচিত পায়।

বিশ্বকর্মার জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আর একটি প্রসিদ্ধ কাহিনী আছে। পুরাণে বর্ণিত কাহিনী অনুযায়ী বিশ্বকর্মার পিতা হলেন অষ্টবসু এবং মাতা হলেন দেবগুরু বৃহস্পতির বোন বরবর্ণিনী

ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণের কাহিনীতে বিশ্বকর্মার জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে বলা হয়েছে স্বয়ং প্রজাপতি ব্রহ্মা তার নাভিকুন্ড থেকে বিশ্বকর্মা কে সৃষ্টি করেন।

বিশ্বকর্মাই ছিলেন দেবী দেবতা এবং সুর ও অসুরদের একমাত্র নির্মাণ শিল্পী। হিন্দু ধর্ম বিস্বাসনুযায়ী বিশ্বকর্মা প্রজাপতি ব্রহ্মার সহায়তায় জগৎ সংসারের রূপরেখা তৈরী করেন।

তাই জগৎ ও সৃষ্টির নির্মাণে ব্রহ্মা এবং বিশ্বকর্মা সমান ভাবেই জড়িত আছে বলে মনে করা হয়। বিশ্বকর্মার  নিপুন শিল্পকর্মের ফসল দধীচির হাড় দিয়ে তৈরী দেবরাজ ইন্দ্রের ব্রজ অস্ত্র।

এছাড়াও বিশ্বকর্মা মা পার্বতীর ইচ্ছায় লংকেশ্বর রাবনের সোনার লঙ্কা নগরীর নির্মাণ করেন। পরে হনুমান লঙ্কা নগরী জ্বালিয়ে দিলে রাবন আবার বিশ্বকর্মাকে ডেকে পুনঃরায় লঙ্কা নগরীর নির্মাণ করেন।

বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয়
বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয়

এছাড়াও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছায় বিশ্বকর্মা দ্বারিকা নগরী  এবং পঞ্চপান্ডবদের ইন্দ্রপ্রস্থ নগরী নির্মাণ করেন। আপনারা হয়ত জানেন বিশ্বকর্মার সেরা নির্মাণ কার্য,দেবলোক অথাৎ স্বর্গের চোখ ধাঁধানো কারুকার্যের লোভে,

হামেশায় সুর ও অসুরের দ্বন্দ লেগেই থাকত। এমনকি এও মনে করা হয় ওড়িশার পুরী শহরের জগন্নাথ মন্দিরে ভগবান জগন্নাথ,সুভদ্রা ও দাদা বলভদ্রের কাঠের মূর্তি বিশ্বকর্মা ভগবান নিজের হাতে তৈরী করেন।

বিশ্বকর্মা পূজা জনকল্যাণকারী ও জনহিত কারী পূজা। সৃষ্টিকর্ম শিল্প কারুকার্য ও কলাকৌশল সহ বিজ্ঞানের জনক ভগবান বিশ্বকর্মা ঠাকুরের পূজা অর্চনা করলে ব্যক্তি জীবনে উন্নতি সাধন হয়।

অবশ্যই পড়ুন : রাখী বন্ধন উৎসব কেন পালন করা হয়। 

বিশ্বকর্মা পূজার ইতিহাস (Biswakarma pujar Itihas)


পৌরাণিক মতে বিশ্বকর্মা পূজার পাঁচালী নিয়ে একটি খুব সুন্দর গল্প আছে। আসুন একনজরে বিশ্বকর্মা পূজার পাঁচালীর গল্পটি একবার শোনা যাক।

একদা একসময়ে কাশী বিশ্বনাথ শহরে একজন অতিসহিষ্ণু ধর্মপরায়ণ রথচালক তার স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস করত। রথচালক সারাদিন মনদিয়ে তার রথচলানোর কাজ করতো।

পেশায় একজন রথচালক হিসাবে তাকে অনেকসময় রথারোহীকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে হত।  এতপরিমান কর্মঠ পরিশ্রম করা সত্ত্বেও

তার পরিবারে দারিদ্রতা যেন কাটতে চাইতোনা,মাসের পর মাস পরিশ্রম করেও দিনের আহার ছাড়া অতিরিক্ত ধন সম্পত্তি সঞ্চয় হতো না।

অপরদিকে রথচালকের স্ত্রীর দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো সন্তানাদি না থাকায় স্বামী ও স্ত্রীর মনে সর্বদা সন্তান প্রাপ্তি নিয়ে একটা চিন্তা লেগেই থাকত।

সন্তান প্রাপ্তির আশায় রথচালক দম্পতী বিভিন্ন সাধু সন্তের কাছে গিয়ে মনের বেদনা ব্যক্ত করতেন কিন্ত সেসব করে তাদের মনে শুধু নিরাশার প্রাপ্তি ছাড়া তারা আশানুরূপ কোনো ফল পেতেন না।

তখন রথচালকের একজন প্রতিবেশী তাদের দুজনকে অমবস্যা পালনের মধ্যে দিয়ে বিশ্বকর্মার ব্রতকথা শুনে বিশ্বকর্মা ভগবানের পূজা করার জন্য বলেন।

এরপরে তারা দুজনেই খুব ধুম-ধাম করে বিশ্বকর্মা পূজা করে এবং অল্প দিনের মধ্যেই তাদের সংসারের সমস্ত দারিদ্রতা দূর হয়ে ও তাদের পুত্র প্রাপ্তি হয়।

এরপর থেকে যন্ত্র পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা তাদের ব্যবসায় ও কর্মস্থলে বিশ্বকর্মা ভগবানের কৃপা প্রাপ্তির আশায় নিয়মিত বিশ্বকর্মা পূজা করতে থাকেন এবং এভাবেই বিশ্বকর্মা পূজার প্রচলন হয়।

ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণে প্রজাপতি ব্রহ্মার শাপে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার মানব যৌনিতে জন্মের উল্লেখ পাওয়া যায়। একবার ব্রহ্ম ক্রোধের বশে বিশ্বকর্মাকে নর রূপে জন্মানোর অভিশাপ দেয়।

ব্রহ্মার শাপে বিশ্বকর্মা ও তার স্ত্রী ঘৃতাচী মানবকুলে জন্ম নেয় এবং তাদের ০৯ টি পুত্র সন্তান হয়। পরে বিশ্বকর্মার এই নয় পুত্র সন্তান বড় হয়ে

সমাজের অন্যতম নয়টি শিল্পের জন্ম দেয়,এই নয়টি শিল্প হল,যথা- ০১.কর্মকার (কামার),০২.কাষ্ঠ শিল্প (ছুতোর/সূত্রধর) ,০৩. স্বর্ণকার  ০৪.কুম্ভকার (মৃত শিল্প),০৫.চিত্রকর,০৬.শঙ্খ শিল্পী,০৭.কাঁসা শিল্প

(কাঁসার বাসন আদি তৈরী করেন যারা),০৮.তাঁতি শিল্প (তাঁতি দের),০৯. ফুল বা পুষ্প শিল্প (মালাকার দিগকে) এইভাবে বিশ্বকর্মা ভগবানের পুত্ররা অতি নিপুণতার সাথে সমাজ ব্যবস্থার মুখ্য শিল্প গুলো উন্মোচন করেন।

বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র


এমন কোনো মান্যতা নেই যে শুধু মাত্র যাদের ঘরে কলকারখানা বা যন্ত্রাদি আছে শুধু তারাই বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র উচ্চারণ করে বিশ্বকর্মা পূজা করতে পারবে।

আপনি যদি বিশ্বকর্মা পূজা করতে চান তাহলে বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র,বিশ্বকর্মা পূজা কিভাবে করতে হয় জেনে রাখাটা জরুরী।

সবার প্রথমে বিশ্বকর্মা পূজা করার জন্য বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ জোগাড় করতে হবে। আসুন বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ হিসাবে বিশ্বকর্মা পূজায় কি কি লাগে দেখে নেওয়া যাক।

বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ

সবার প্রথমে আপনি যেখানে বিশ্বকর্মা পূজা করতে চান সেখানে একটি বিশ্বকর্মা ভগবানের মূর্তি কিংবা ফটো জোগাড় করে নিন। এছাড়াও বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ হিসাবে

যে সমস্ত জিনিস গুলো জোগাড় করতে হবে যেমন- অক্ষত আতপ চাল,ফুল,ফল,কাশ ফুল,পাঁচ রকমের মিষ্টি,লুচি,ধুপ,ঘী,মধু,দই,পৈতে ইত্যাদি।

এছাড়া বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ হিসাবে ঘট,শীষ ওয়ালা ডাব,নতুন গামছা,ঘন্টা,কাঁসর,পঞ্চ প্রদীপ,কুশা ও কুশি এবং হোম যজ্ঞের জন্য বালি,বেল কাঠ ও কাশ ঘাসের খড় ইত্যাদির প্রয়োজন হয়।

বিশ্বকর্মা পূজা কিভাবে করতে হয় 

বিশ্বকর্মা পূজা করার জন্য বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ গুলো জোগাড় করার পর আমাদের বিশ্বকর্মা পূজার নিয়ম অনুযায়ী  অথাৎ বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র উচ্চারণ জানতে হবে।

সবার প্রথমে স্নান সেরে শুদ্ধ কাপড়ে ঠাকুর ঘরে ঢুকতে হবে। তারপর বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ গুলি একে একে সাজিয়ে নিতে হবে।

যেমন- গঙ্গা জল দিয়ে ঘট ভরার পর ঘটে উপরে আমের পাতা সহ শীষ ওয়ালা ডাব রাখতে হবে। ঘট পাত্রটি যদি মাটির হয় তবে ঘট পাত্র টিকে পাটের দড়ি বোড়ের উপর ঘট রাখতে হবে।

এছাড়া খড়ি মাটি দিয়ে পূজার স্থানে আলপনা আঁকতে হবে। এরপর আতপ চালের নৈবদ্য সাজিয়ে তারপর ফুল বেলপাতা সহযোগে বিশ্বকর্মা পূজার বই পড়ে পূজা শুরু করতে হবে।

অবশ্যই পড়ুন : শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী কেন পালন করা হয়। 

বিশ্বকর্মার প্রণাম মন্ত্র 

বিশ্বকর্মা পূজা করার জন্য বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র জানা দরকার। বিশ্বকর্মা পূজার প্রণাম মন্ত্র হল –

দেব শিল্পী মহাভাগে দেবানাং কার্যসাধক। 

বিষয়কর্মন্ন মস্তভ্যং সর্বাভীষ্ট প্রদায়ক। 

ওঁম নমঃ বিশ্বকর্মায় নমঃ। 

বিশ্বকর্মা পূজার অঞ্জলী মন্ত্র 

বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্রর সাথে বিশ্বকর্মা পূজার অঞ্জলী মন্ত্র স্মরণে রাখাটা জরুরী। বিশ্বকর্মা পূজার অঞ্জলী মন্ত্র হল –

দংশপালঃ মহাবীরঃ সুচিত্রঃ কর্মকারকঃ।
বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃকতঞ্চ বাসনামানো দণ্ডধৃক।
ওঁ বিশ্বকর্মণে নমঃ।

FAQ


প্রশ্ন- বিশ্বকর্মা পূজা ২০২৩ কবে ?

উঃ- ১৭ ই সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পূজা।

প্রশ্ন- বিশ্বকর্মা কে ?

উঃ- হিন্দু ধর্মে বিশ্বকর্মা হলেন শিল্পকর্মের দেবতা।

প্রশ্ন- বিশ্বকর্মা পূজায় কি কি লাগে ?

উঃ- বিশ্বকর্মা পূজায় ফল,ফুল,বেলপাতা,তুলসী,চন্দন আদি লাগে।

প্রশ্ন- বিশ্বকর্মার ছেলের নাম কি ?

উঃ- বিশ্বকর্মার ছেলের নাম হল বিশ্বরূপ।

পরিশিষ্ট


বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয় আটিকেলটিতে বিশ্বকর্মা পূজার প্রেক্ষাপটের সংক্ষিপ্ত সূচি বিভিন্ন পুরাণের বর্ণিত কাহিনী থেকে তুলে ধরা হল।

বিশ্বকর্মা পূজা হল শিল্পকর্মের দেবতা তাই মানবকুলে বিভিন্ন কলকারখানায় বিশ্বকর্মা যন্ত্রের দেবতা হিসাবে ধুম-ধামের সহিত পূজিত হয়ে থাকেন।

এই আর্টিকেল গুলোও পড়ে দেখুন-
আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ০৫ ষ্টার রেটিং দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here