বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য (Bermuda Triangle)

আজকে আপনাদের জন্যে নিয়ে এসছি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য নিয়ে নতুন একটি গল্প। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস ৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো।

তাই আজকে তুলে ধরব বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল এর আসল রহস্য (Bermuda Triangle) নিয়ে প্রচলিত কিছু অমিমাংশিত বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনাবলীর

সাথে কম বেশি আপনাদের আগে থেকে পরিচয় আছে। তবুও যে সমস্ত পাঠক নতুন,তাদের উদ্দেশ্য আরও একবার বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি ? বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য (Bermuda Triangle)

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান,বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস ও বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল ও দাজ্জাল এর ভয়ঙ্কর  কাহিনী আরও একবার আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য (The Mystery of Bermuda Triangle) 


বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল এর আসল রহস্যের ইতিহাস ৫০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। কিন্তু ভাববার বিষয় এই যে মানুষ পৃথিবীর গন্ডি অতিক্রম করে আজ চাঁদে পৌঁছে গেছে।

তবুও আধুনিক বিজ্ঞান এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য উন্মোচন আজও করে উঠতে পারেনি। সুপার পাওয়ার আমেরিকার মতো বাহুবলি দেশ ও আজ

হাত খাড়া করে দিয়েছে এই পৈশাচিক শক্তির কাছে। আধুনিক বিজ্ঞানের কোনো ভৃত্য আজ পর্যন্ত বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্যের কোন কুলকিনারা করে উঠতে পারেনি।

এমন কি রয়েছে ঐ বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে ? যেখানে বিজ্ঞান হয়ে যায় অসহায় ! বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle ) সীমানায়,সে জলপথে বা আকাশপথেই হোকনা কেন,

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সীমানায় জলপথে জলজাহাজ,আকাশপথে উড়োজাহাজ,যেই ওই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর  সীমানায় প্রবেশ করেছে,তার আর ফিরে আসা হয়নি।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর সীমানায় গিয়ে সেখানেই বিলীন হয়ে গেছে সে আর কোনো দিন ফিরে আসেনি। কর্পূর কে যেমন জ্বালিয়ে দিলে তার কোনো কিছু আর অবশিষ্ট  থাকেনা।

কর্পূর ধোঁয়া হয়ে বিলীন হয়ে যায়। সেরকম বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle) যে একবার প্রবেশ করে সেও কর্পূরের মত উবে যায়,তার কোনো ধ্বংসাবশেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়না।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle) সমুদ্রবক্ষে খুব বড় একটা জায়গা জুড়ে রয়েছে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান ও সীমানা আনুমানিক চার লক্ষ চল্লিশ হাজার মাইল।

সত্যি কথা বলতে গেলে ভূগোলে পৃথিবীর মানচিত্রে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বলে নির্দিষ্ট কোনো জায়গা চিহ্নিত করা নেই। তাই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle) কে

যদি পৃথিবীর মানচিত্রে খুঁজে বার করার চেষ্টা করেন তাহলে বিফল হবেন। সেরকম বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বলে কোনো জায়গা আপনি বিশ্বের মানচিত্রে খুঁজে পাবেন না।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান (Bermuda Triangle location ) 


বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান নির্ণয়ের জন্যে ফ্লোরিডা,বারমুডা এবং মায়ামির পুয়োর্তোরিকো বলে তিনটি দ্বীপকে,কাল্পনিক রেখা দ্বারা একত্রিত করে যোগ করলে

একটি ত্রিভুজের মত দেখতে লাগে। কাল্পনিক রেখা দ্বারা চিহ্নিত ত্রিভুজাকৃতি করে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান নির্ণয় করে এই জায়গাটির নাম দেওয়া হয়েছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল।

লোকমুখে এই সামুদ্রিক ট্রায়াঙ্গলটিকে যমের দুয়ার,বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ও দাজ্জাল,বারমুডা ট্রায়াঙ্গালের সামুদ্রিক পিশাচকে,যমের দুয়ার,কেউ আবার শয়তানের ট্রায়াঙ্গেল বলে থাকে।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য

কিন্তু এই যমের দুয়ারের রহস্য আজ রহস্য হয়েই রয়ে গেছে। কোনো আধুনিক বিজ্ঞান এই রহস্যের পর্দার রাজ খোলতে পারেননি। তাই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য আজও এক বিস্ময়।

  বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি  (What is the Bermuda Triangle) 


বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি ? এই ব্যাপারে মানুষ সর্বপ্রথম জানতে পারে ১৯৫০ সালে আসোসিয়েট নামের একটি মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি ?

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হলে,আমেরিকা বাসি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি ? বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য জানার জন্য উতলা হয়ে ওঠে।

১৯৬৪ সালে ভিনসেন্ট গেডলিজ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য নিয়ে দুটি ম্যাগজিন প্রকাশ করেন,এই ম্যাগজিন ০২ টি হল দ্য ডেডলি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এবং ইনভিজিবিল হরিজন

সর্বসাধারনের কাছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি ? বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য সামনে আসতেই মানুষ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে।

এরপর থেকেই বিভিন্ন হলিউড ফ্লিম প্রযোজক বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি ? তা জন সম্মুখে নিয়ে আসার জন্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা নিয়ে মুভি বানাতে শুরু করে দেয়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা (Bermuda Triangle) 


১৯৪৫ সালের ৯ জুলাই ইউ.এস. নোভাল কমান্ডের একটি লড়াকু উড়ো জাহাজ যার কমান্ডিং অফিসার ছিলেন থমাস। তিনি এবং তার সাথে ঐ জাহাজের আরও ১০ জন ক্র মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে

ফ্লোরোডিয়ার নোভাল এয়ার বেস থেকে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে উড়ান ভরে। প্রায় ৪ ঘন্টা যাবৎ আকাশে জাহাজটি ওড়ার পর ATC র সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে

বিমানটি নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। পরেরদিন সকালবেলা ফ্লোরিডা নোভেল বেশ থেকে জাহাজটিকে খোঁজার জন্য একটি জাহাজ পাঠানো হয়।

প্রায় ১০ দিন ধরে জাহাজটিকে খুঁজে বের করার জন্য বারমুডার কাছাকাছি এলাকায় সার্চ অপারেশন চালানো হয়। কিন্তু হাতে নিরাশা ছাড়া আর কিছু লাগেনা।

জাহাজটির কোনো ধ্বংসাবশেষ বা যাত্রীদের লাশ কিছুই পাওয়া যায় না,সার্চ অপারেশন কারী টিম নিরাশ হয়ে ফিরে আসে।

আরো পড়ুন: ওসামা বিন লাদেন কে কিভাবে মারা হয়েছিল। 

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা ঘটে যাওয়ার প্রায় ৫ মাস পরে ফ্লোরিডা ইউ.এস.নেভীর টর্পেডো আভেঞ্জের বোমারু বিমান এর ৫ টি জাহাজের একটি গ্রূপ

মোট ১৫ জন ক্র মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্যে ইউ.এস.নোভাল এয়ার বেস থেকে উড়ান ভরে। এই গ্রূপে সামিল হয়েছিল ইউ.এস.নেভীতে সামিল হওয়া নতুন সেনা অফিসারেরা।

তাদের সাথে ছিল ২৮ বছরের ট্রেনার কমান্ডার নেভি লেফটেন্যান্ট চার্লস ট্রেলর। বিমানের ক্র মেম্বার দিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল

ফ্লোরিডা এয়ারবেস থেকে পূর্ব দিকে বার্হামাস এ গিয়ে বম্বিং করার করে,৭৩ কিমি উত্তর দিকে গিয়ে ইউ ট্রান নিয়ে ফ্লোরিডা নোভাল এয়ার বেসে ফিরে আসার জন্য।

এই পুরো অপরেশনের জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল ৩/৪ ঘন্টা। সবকিছুই এ যাবৎ ঠিকঠাক চলছিল বিমানগুলি তারা তাদের মিশন শেষ করে ফিরে আসছিল।

হঠাৎ পথের মধ্যে বিমানের পাইলটরা এক অভাবনীয় অস্বস্তি অনুভব করতে থাকে। টিমের প্রধান ট্রেনার কমান্ডার নেভি লেফটেন্যান্ট চার্লস ট্রেলর

বাকি বিমানের পাইলটদের কাছ থেকে তাদের কুশলতার খবর নিতে থাকে। কিন্তু ততক্ষনে বোমারু বিমানের পুরো টিম বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle) সীমানায় প্রবেশ করে গেছিল।

তাদের বিমানের কম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা দিশা হীন ভাবে আকাশে চক্কর কাটতে থাকে। অপারেশন কমান্ডার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে রেডিও সংযোগ জোড়ার চেষ্টা করে

কিন্তু তা বিফল হয়। কমান্ডার বাকি পাইলট দের সবাইকে,মায়ামির এয়ারবেসে ফিরে যাওয়ার বাত্রা দেয়। কিন্তু ততক্ষনে অনেক দেরি হয়েগেছিল।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য

তারা ফ্লোরিডা এয়ার বেস কন্ট্রোল রুমে যে শেষ বাত্রা দিয়ে বলেছিল,“আমরা আমাদের সামনে এক সবুজ রঙের উচ্ছাসিত জলের উঁচু ঢেউ দেখতে পাচ্ছি,যার এক একটি ঢেউ এর তরঙ্গ আকাশ কে ছুঁয়ে যাচ্ছিল।

আমাদের বিমানের কম্পাস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে,আমরা গোলকধাঁধার মধ্যে ফেঁসে গেছি এখান থেকে বের হওয়া খুব মুশকিল।

তোমরা আর কেউ আমাদের খোঁজ করতে এসোনা নইলে তোমরাও হয়তো আমাদের মত এই ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে পারো।”

এরপর কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে বিমানের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মনে করা হয় বিমান গুলির কম্পাস খারাপ হয়ে যাওয়ায় বিমানগুলি দিক হারিয়ে ফেলে

এবং পর্যাপ্ত পরিমান ফিউলের অভাবে জ্বালানি শূন্য হয়ে একে একে ০৫ খানা বোমার বিমান সমুদ্রে ভেঙে পড়ে। এইসব বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা ঘটে যাওয়ার ৪ ঘন্টা পরে

ফ্লোরিডা নোভাল এয়ার বেশ থেকে অনুসন্ধান করার জন্য মেরিনা নামের একটি টহি বিমান পাঠানো হয়। এই বিমানটি আকাশে এবং জলে দুই জায়গাতেই চলতে সক্ষম ছিল।

বিমানটিতে ১২ জনের একটি টিমকে পাঠানো হয়েছিল,হারিয়ে যাওয়া বিমান গুলিকে খুঁজে বের করার জন্য।কিন্তু দু:ভাগ্যের বিষয় এই যে টহি বিমানটিকে,

হারিয়ে যাওয়া ৫ টি বোমারু বিমানের খোঁজ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল সেই জাহাজটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের ঘেরা তোপে এসে নিখোঁজ হয়ে যায়।

একই ভাবে পর পর প্রথমে ০১টি,তারপর ০৫ খানা,তারপর আরও ০১ খানা,মোট ০৭ খানা বিমান একই জায়গা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়,যার কোনও ধ্বংসাবশেষ বা যাত্রীদের লাশ,কোনো কিছুই পাওয়া যায়না।

একইভাবে পরপর বিমান নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা আমেরিকা সরকারকে ভাবিয়ে তোলে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনার খবর কাগজের হেডিঙে বার হয়।

পুরো আমেরিকা তথা বিশ্বের বিজ্ঞনী মহলে,বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা ও বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য (Bermuda Triangle) প্রধান চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধান এর জন্য বিশেষজ্ঞ দলের অনুসন্ধান


এরপর থেকেই বিশেষজ্ঞরা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধান করার জন্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দেয়।

আমেরিকা সহ আরো অন্যান্য দেশ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধান করার কাজে লেগে যায়। গবেষণায় দেখা বোমারু এভেঞ্জার বিমান গুলি ফ্লোরিডার ব্রাহামাস এর আকাশের পূর্বপ্রান্তে

এসে পৌঁছলে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিমান গুলি নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে বিমানটিকে খোঁজার জন্য যে টহি বিমান পাঠানো হয়েছিল।

টহি বিমানটি উড়ে গেলে বিমানের ক্যাপ্টেন এয়ার ট্রাফিক রুমে বাত্রা দিয়ে বলেছিল ‘আমরা সামনের দিকে অপারেশনের জন্য এগিয়ে যাচ্ছি আবহাওয়া এবং আকাশ পরিষ্কার।’

এই বাত্রা কন্ট্রোল রুমে দেওয়ার পর থেকে বিমানটির সাথে কন্ট্রোল রুমের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অনুসন্ধানে জানা যায় যখন বিমানগুলো

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda triangle) ভয়ঙ্কর দুঃঘটনার স্বীকার হচ্ছিলো,তখন অনতি দূরে একটি জাহাজ এই ঘটনাকে প্রতক্ষ দেখেছিল।

সেই জাহাজের ক্যাপ্টেনের তথ্যে জানা যায় বিমানগুলি যখন অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল তখন আকাশে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়।

এই আওয়াজ শুনে ক্যাপ্টেন জাহাজের চেম্বার থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। ক্যাপ্টেন আকাশে ঘন মেঘের সাথে প্রখর আলোক রশ্মি দেখতে পায়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা দেখে ক্যাপ্টেন মনে করেন কোনো বিমান হয়তো খারাপ জলবায়ুর স্বীকার হয়ে বিমানগুলিতে আগুন লেগে যাওয়ার জন্য সমুদ্রে ভেঙে পড়েছে।

এরপর ক্যাপ্টেনের মুখে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা শুনে অন্য একটি সার্চ দল ওই ঘটনার সত্যতা যাচাই করে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য জানার জন্য ঘটনা স্থলে যায়।

তারা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসে পাশের এরিয়া সার্চ করে দেখেন,কিন্তু দুঃঘটনা গ্রস্থ এলাকায় বিমানের ধ্বংসস্তূপ কিংবা বিমানে থাকা চালকের লাশ,

এমনকি আসবাবপত্রের অবশিষ্ট কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়না। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধান এর তদন্তকারী দলের কাছে তখন বসে,বসে মাথার চুল ছেঁড়া ছাড়া,আর অন্য কোনো রাস্তা থাকেনা।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধানকারী দল বুঝে উঠতে পারছিলননা বিমানগুলো আসলে গেল কোথায় ? বিমানটিকে সমুদ্র গ্রাস করল না আকাশে ফুঁড়ে উপরে চলে গেল কিছুই বোঝার উপায় ছিলনা তাদের।

আরো পড়ুন:টাইটানিক জাহাজ ডোবার আসল কারণ। 

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল দু:ঘটনার পুরো বিবরণ সহ রিপোর্ট ইউ.এস.নেভির টিম আমেরিকা সরকারের হাতে তুলে দেয়। এই রিপোর্টে ছিল অবাক করার মত,

তারা তাদের দেওয়া রিপোর্টে লেখেন-‘আমেরিকার ০৫ খানা এভেঞ্জার বোমারু বিমান ও তাদের অনুসন্ধানকারী টহি বিমানটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান করা জায়গায় গিয়ে 

খারাপ জলবায়ুর সম্মুখীন হয়ে দু:ঘটনার স্বীকার হয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে।’ এর বেশি তথ্য প্রমান তাদের বিবরণে পাওয়া যায়না।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য

এটাই ছিল ইউ.এস.নেভি এবং অন্যান্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধানকারী বিশেষজ্ঞদের দেওয়া অন্তিম রিপোর্টের খসড়া।

তাদের মধ্যে কেউই জাহাজ ডোবার আসল কারণ সম্পর্কে অবগত হতে পারেনি ও বিশেষজ্ঞ টিম,জাহাজ ডোবার আসল কারন হিসাবে কোনো নিশ্চিত সিধান্তে পোঁছাতে পারেনি।

এরপরেই ইউ.এস.নেভি এবং আমেরিকা সরকার দ্বারা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle) ঘটে যাওয়া দুঃঘটনার স্পেশাল রিপোর্ট মিডিয়ার সামনে নিয়ে আসে।

এরপর খবরের মাধ্যমে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের আতঙ্ক পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য কে নিয়ে এক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

সবাই ধরে নেয় যে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এ যাওয়া মানে নিশ্চিত মৃত্যুকে নিমন্ত্রণ দেওয়া। যেখান থেকে ফিরে আসার বিকল্প আর কোনো রাস্তা নেয়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস 


এরপর অনেক দুঃঘটনা বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলে ঘটে গেছে, তদন্তকারী দল অতীত ইতিহাস ঘেটে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস নিয়ে নতুন তথ্য সামনে আসে।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাসের বিবরণ থেকে সামনে আসে,৫০০ বছর আগে থেকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল একটি  রহস্যময় জায়গা হয়ে আছে।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান যেখানে রয়েছে সেই জায়গা দিয়ে কোনো রকমের বিমান ও জল জাহাজ,যেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল (Bermuda Triangle) এর সীমানায় প্ৰবেশ করেছে,

সেখান থেকে জাহাজ ও উড়োজাহাজ সবই রহস্য জনক ভাবে ঐ জায়গা থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছে,আর নিখোঁজ হওয়া বিমান ও জাহাজের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

মনেকরা হয় বারমুডা ট্রায়াঙ্গল থেকে  প্রতি বছর গড়ে ছোট ও জাহাজ এবং উড়ো জাহাজ মিলিয়ে ০৪ খানা করে জাহাজ নিখোঁজ হয়ে যায়।

আজ পর্যন্ত যে সমস্ত জাহাজ নিখোঁজ হয়েছে সেই সমস্ত জাহাজের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আজথেকে ২৩ বছর আগে ১৯৯৭ সালে জার্মান এয়ার ফোর্সের ৩৩ জনের একটি টিম

বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলে প্রবেশ করলে বিমানটি,নিখোঁজ হয়ে যায়। আজ পর্যন্ত ঐ জার্মান এয়ার ফোর্সের বিমানটির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

যা আজও এক রহস্য হয়েই রয়ে গেছে। আজথেকে প্রায় ১৪৭ বছর আগে নিউইয়র্ক থেকে জেনেভা গামী The Mery siest নামের একটি জাহাজ আটলান্টিক সাগর হয়ে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে এসে পৌঁছায়।

জাহাজটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল থেকে অন্য জাহাজের মত নিখোঁজ হয়ে যায়। এই ঘটনার এক মাস পরে মার্কিন কোস্ট গার্ড জাহাজটিকে সমুদ্রে ভাসতে দেখে।

জাহাজটিকে দেখে বিশেষজ্ঞ দের টিম ঘটনা স্থলে পৌঁছে,জাহাজটিকে পরীক্ষা করে দেখেন,জাহাজে থাকা প্রতিটি জিনিস নিজের নিজের জায়গায় অক্ষত ছিল।

কিন্তু জাহাজের মধ্যে কোনো যাত্রী ছিলনা। এইসমস্ত বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ঘটনা গুলো রীতিমত সবাই কে নতুন করে অবাক করে দেয়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য

১৯১৮ সালের ৪ ই মার্চ আমেরিকার একটি পণ্যবাহী ইউ.এস.সাই ক্লপস নামের একটি জাহাজ ৩০৬ জন যাত্রী  সহ প্রচুর পরিমানে ম্যাঙ্গানিজ লোড করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আমেরিকায় ফিরছিল।

আমেরিকা ফেরার পথে জাহাজটি বারমুডা ট্রায়েঙ্গেলে প্রবেশ করলে জাহাজটি কয়েক মিনিটের মধ্যে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর অবস্থানে সমুদ্র বক্ষে ডুবে যায়।

১৯৪৭সালে মার্কিন সেনার একটি C-৪৫ বিমান যখন Bermuda Triangle এর উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল,তখন পর্যন্ত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে জাহাজটির রেডিও তে যোগাযোগ ছিল।

কিন্তু বারমুডা ট্রায়াঙ্গল প্রবেশ করতেই জাহাজটির সাথে রেডিও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর জাহাজটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর অবস্থানে এসে নিখোঁজ হয়ে যায়।

১৯৫০ সালে আমেরিকার স্যান্ড্রা নামের একটি জাহাজ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় একই ভাবে। যার কোনো খোঁজ খবর আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

১৯৫২ সালে ব্রিটিশ এয়ার লাইনের একটি বিমান ৩৫ জন যাত্রীকে নিয়ে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল থেকে নিখোঁজ হয়ে গেলে,প্রায় একমাস যাবৎ জাহাজটিকে আটলান্টিক মহাসাগরে খোঁজা হয়।

কিন্তু নিস্ফলতা ছাড়া আর কিছুই হাত লাগে না। ১৯৭২ সালে জার্মানির একটি পণ্যবাহি জাহাজ প্রায় ২০,০০০ টনের কাছাকাছি ভারী মালপত্র নিয়ে আটলাটন্টিকের বুকে ভেসে চলছিল।

কিন্তু হঠাৎ জাহাজটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এ প্রবেশ করে এবং দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে জাহাজটি ডুবে যায়। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর ইতিহাস এর পাতা উল্টে দেখলে দেখতে পাওয়া যায়,

“ক্রিস্টেফার কলম্বাস যখন তার জাহাজ নিয়ে আমেরিকা আবিষ্কার করতে সমুদ্র বক্ষে পারি জমাচ্ছিলেন,তখন তার জাহাজ এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল দুঃঘটনার স্বীকার হয়।

তিনি তার ডায়েরি তে লিখেছেন-সন্ধে নামার আগে তারা সমুদ্রে জাহাজ ভাসিয়ে আগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন,শান্ত সমুদ্র পরিষ্কার আকাশ,সূর্য সমুদ্র বক্ষে ডুবতে বসেছিল।

সুন্দর সন্ধ্যায় রোমান্টিক আবহাওয়ায় মৃদুমন্দ বাতাসে কলম্বাস তার অন্য সাথীদের সাথে মদিরা পান করে আনন্দ উপভোগ করছিলেন।

কলম্বাসের জাহাজের নাবিক রড্রিগো ডি ট্রায়ানা হাতে করে দূরবীন লাগিয়ে সমুদ্র বক্ষে নিয়মিত নজর জমিয়ে রেখেছিলেন। হঠাৎ তিনি আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে একটা আলোকে কাঁপতে দেখলেন।

ভালো করে দেখলেন আলোটাকে,না এটা কোনো গ্রহ বা তারার আলো নয়,আলোটা ক্রমশ পিছিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

কলম্বাস নিশ্চিত হতে পারছিলেন না,তাই হাঁক দিলেন তার সহগামী আর এক নাবিক পেরো গুইতেজরোকে। তিন একই ভাবে আলোটিকে ক্রমশ পিছিয়ে যেতে দেখলেন।

পেরো গুইতেজরোকে বললেন না ক্যাপ্টেন এটা কোন জাহাজের আলো নয়। জাহাজের আলো হলে আলোটা ক্রমশঃ সমুদ্রের জলে নাচতে থাকত,

কিন্তু আলোটাকে নাচতে দেখছিনা নাতো,আলোটা তো সমুদ্র পৃষ্ঠে একই জায়গায় স্থির হয়ে আছে সমুদ্রের গায়ে ঘেঁষা ঘেষি করে পিছিয়ে চলেছে যেন।

রড্রিগো কম্পাস বার করে,দিক দেখার চেষ্টা করতে লাগল,না মনে হচ্ছে,কম্পাস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে আরো একটি কম্পাস বার করে দেখলেন,

এতো কম্পাসের কাঁটা ক্রমশ কেঁপে চলেছে গতিক ভালোনা দেখে,কলম্বাস ডেক থেকে বাইরে বেরিয়ে এলেন।বাইরে বেরিয়ে এসে দেখতে পেলেন,সামনে ধোঁয়াশা ঘন উচ্চাসিত জলরাশি সাপের ফণার মত নাচতে নাচতে

উপরে উঠে যাচ্ছে,কলম্বাস আগেই শুনেছিল সমুদ্রের নিচে এক পাহাড় আছে,সেখানে যদি দিক ভুল করে ধাক্কা লাগে তাহলে নিশ্চিত মৃত্যু ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবেনা এদিকে কম্পাস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

আরো পড়ুন: মোনালিসা ছবির মধ্যে এলিয়ন। 

কলম্বাস তার লেখা ডায়েরিতে ১১ ই অক্টবর ১৪৯২ সালে এই ঘটনার উল্লেখ করে বলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আবিষ্কার করার একদিন আগে

তার জাহাজ বারমুডা নামক দ্বীপের কাছে এক জায়াগায় এরকম ভয়ানক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিল। কলম্বাসের জাহাজ দুঃঘটনার স্বীকার হওয়া সেই জায়গাটি হল বারমুডা ট্রায়াঙ্গল।”

এরপর বিভিন্ন গবেষক দল বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধান করার অনেকবার চেষ্টা চালিয়েছেন। ২০০১ সালে Tall Wise Wing এবং তার এক সাথী A.K Polin বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্য সমাধান

করার চেষ্টা করেন। Tall Wise Wing তার তথ্যে লেখেন তাদের আটলান্টিক সাগরের নিচে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অবস্থান এর জায়গায় আজ থেকে অনেক বছর আগে,

অ্যাটলান্টিস নামের একটি শহর জলসমাধি হয়ে যায়। এই অ্যাটলান্টিস শহরটি সেই সময়  প্রযুক্তির দিক দিয়ে এখনকার থেকে অনেক এগিয়েছিল।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য

তারা তাদের শহর কে রক্ষা করার জন্য এমন এক ধরণের রশ্মি আবিষ্কার করেছিল যে সেই রশ্মি দিয়ে যেকোনো বস্তু কে নিজের দিকে আকর্ষিত করে নিমেষে ধ্বংস করে দেওয়া যেত।

অ্যাটলান্টিস শহর জলের তলায় তলিয়ে গেলেও আজও সেই রশ্মি সমুদ্রে দাফন হয়ে আছে। তাই সময়,সময় এই রশ্মির প্রকাশ সমুদ্রের ভিতর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকে।

যার জন্যে ঐ রশ্মির সংস্পর্শে যে জাহাজ আসে সেই জাহাজ নিমেষে ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু এই অ্যাটলান্টিস শহরের উলেখ বিশেষ কোনো জায়গায় পাওয়া যায়না।

শুধু মাত্র বিখ্যাত দার্শনিক পুল্টো ও তার লেখা বইয়ের একটি পাতায় এই কাল্পনিক শহরের উল্লেখ করেছেন।বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল রহস্য নিয়ে আরও একটি তত্ব শোনা যায়।

যেখানে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আছে,সেখানে পৃথিবীর গুরুত্ব আকর্ষণ শক্তি অনেক বেশি। তাই সেখানে চুম্বকীয় তরঙ্গ উৎপন্ন হয় এই চুম্বকীয় তরঙ্গের জন্য

অতি সহজেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর উপর দিয়ে যাওয়া যেকোনো বস্তু প্রবল আকর্ষণ বলের জন্য সমুদ্র বক্ষে এসে ডুবে যায়।

অনেকের ধারনা বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল যেখানে অবস্থান করছে সেখানে সমুদ্রের নিচে অনেক বেশি পরিমানে মিথেন গ্যাস আছে।

যা নিরন্তর ওই জায়গা থেকে বের হয়ে ঐ গ্যাস বায়ুতে অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলেই জ্বলে ওঠে। মিথেন গ্যাস অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে জ্বলে যাওয়ায় ঐ স্থান বায়ুশুন্য

হয়ে গেলে আসে পাশের বাতাস ওই খালি জায়গা পূরণ করার জন্য ছুটে আসে। এরফলে সেখানে প্রবল তীব্র ঘূর্ণি ঝড়ের সৃষ্টি হয়।

এই ঝড় এতটাই তীব্র হয় যে,সেখান দিয়ে যাওয়া বিমান বা জলজাহাজ যায় হোক না কেন, শুন্য স্থানের কারণে বায়ুর মধ্যে চাপ সৃষ্টি হয়ে নিমেষে নিজের দিকে টেনে নেয়।

আবার কোন কোনো বৈজ্ঞানিক মনে করেন বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে (Bermuda Triangle) ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ঘন মেঘের সৃষ্টি হয়,আরো ওই ঘন ইলেকট্রোম্যাগনেটিক মেঘের মধ্যে প্রবেশ করে

যেকোনো যানের ইঞ্জিন এবং ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাদি খারাপ হয়ে যায়। এই যান্ত্রিক গোলযোগের কারণেই হামেশাই বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল এর অবস্থান এর জায়গায় দুঃঘটনা ঘটতে থাকে।

১৯১৭-১৯১৮ সালের কাছাকাছি সময় এক নতুন তত্ব সামনে আসে,যে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল বলে,ভয়ানক বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ও দাজ্জাল বলে কিছু সেখানে নেই,

এসব হল আমেরিকার সুপরিকল্পিত মনগড়া গল্প। কারন হিসাবে বলা হয় ওই এলাকায় আমেরিকা এবং তার সেনা বাহিনী গোপন সেনা অভ্যাস এবং নিউক্লিয়ার হাতিয়ারের টেস্টিং করে থাকেন।

আর এই জন্য আমেরিকা কখনোই চায়না ঐ এলাকায় অন্য কেউ আসুক। তাছাড়া বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আটলান্টিক মহাসাগরের এক অতি ব্যস্ততম বাণিজ্যিক রুট।

কেউ কেউ মনে করেন আটলান্টিক মহাসাগরের তলে আমেরিকার গুপ্ত See base testing lab রয়েছে। কিন্তু নাসা তার স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে এর কত গুলি ছবি তোলেন।

সেই ছবিতে দেখতে পাওয়া যায় যেখানে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আছে সেখানে আকাশে হেক্সাকুলান নামের এক অতিঘন মেঘের সৃষ্টি হয়ে ভয়ানক ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়।

আর এই ঘূর্ণবাতের গতিবেগ ২৭৩ কিমি পার সেকেন্ড,এই গতিবেগ যে কোনো জাহাজ কে ডোবানোর জন্য যথেষ্ট।

আরও পড়ুন: মিশরের পিরামিডের রহস্য। 

কিন্তু নাসার এই দাবি অনেকে বিশ্বাস করেন না। তাদের এর বিপক্ষে প্রশ্ন হল তাহলে সমস্ত জাহাজের কম্পাস কেন বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এ এসে বন্ধ হয়ে যায় ?

এর উত্তরে এক বিশেষজ্ঞ দলের মতামত পৃথিবীর ভূমি তলে লোহা আছে। আর পৃথিবী তার নিজে কক্ষ পথে নিয়মিত ঘুরে চলেছে।

এই ঘূর্ণনের ফলে পৃথিবী তার কক্ষ পথের চারিদিকে একপ্রকার চুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি করে,আর এই চুম্বকীয় ক্ষেত্র হল পৃথিবীর নর্থ পোল এবং সাউথ পোল।

চুম্বকের ধর্ম হল সম মেরুকে বিকর্ষণ এবং বিপরীত মেরুকে আকর্ষণ করা। তাই সাধারণ ভাবে কম্পাস নর্থ পোল এবং সাউথ পোলের দিকে কম্পাসের কাঁটা দিয়ে আমাদিকে দিক দেখায়।

কিন্তু কম্পাসে থাকা চুম্বকীয় শলাকায় খুব পাতলা চুম্বক থাকে এবং কম্পাস তার চুম্বকীয় ধর্ম অনুযায়ী উত্তর এবং দক্ষিণ দিশা কে অনুসরণ করে।

কিন্তু বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে এসেই কম্পাস বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে -বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে সমুদ্রের গভীরে প্রচুর পরিমানে ভৌতিক চুম্বক আছে।

এই শক্তিশালী চুম্বক,কম্পাসে থাকা চুম্বকের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী,সেই জন্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গালে এসে কম্পাস খারাপ হয়ে যায়।

এই শক্তি শালী চুম্বকের সামনে কম্পাসের মধ্যে থাকা চুম্বক তার দিক নির্ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর কথা রামায়নে উল্লেখ আছে বলে অনেক মনে করেন।

তাদের মতে লঙ্কার রাজা রাবন ভগবান শিবের আরধনা করে,এক দিব্য মণি বরদান হিসাবে ভগবান শিবের কাছ থেকে পেয়েছিলেন।

এই মণির শক্তি দ্বারা রাবন যার সঙ্গে যুদ্ধ লড়তেন তার অর্ধেক শক্তি নিয়ে নাভিকুন্ডে জমা করে রেখে দিতেন। এই মনির দৌলতে তিনি দেবতা দিকেও হারিয়ে ছিলেন ।

এরপর দেবতাদের পার্থনায় ভগবান শিব ঋষির ছদ্মবেশে রাবনের স্ত্রী মন্দোদরীর কাছ থেকে ভিক্ষা হিসাবে মণি নিয়ে নেয়।

এরপর ভগবান শিব এই মনি কে ঠিকঠাক কোন গোপন জায়গায় লুকানোর দায়িত্ব দেয় হনুমানকে। হনুমান তখন শিব এর দেওয়া মনিকে সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে দেন বলে মনেকরা হয় ।

যেখানে এই মনি লুকিয়ে রাখা হয়েছিল সেই জায়গা হল বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। এই জন্যই মণির সেই তেজ আজও সব জিনিস কে আকর্ষণ করে ও নিজের দিকে টেনে নেয়।

বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল কে  নিয়ে আর একটি বেদে পাওয়া থিওরী কাজ করে। সবথেকে প্রাচীন বেদ ঋকবেদে উল্লেখ আছে যে,পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।

আর মঙ্গল কে তার মা পৃথিবী থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়,এরফলে পৃথিবী চরম আঘাত পেয়ে,পৃথিবী বক্ষে এক গভীর ক্ষত স্থানের সৃষ্টি হয়।

এরপর ধীরে ধীরে পৃথিবী তার সংজ্ঞা হারাতে থাকে,এই জন্য পৃথিবী নিজের কক্ষপথ থেকে ২৩.৫ ডিগ্রি দক্ষিণে ঝুকে যায়। তখন দেববৈদ্য অশ্বিনী পৃথিবীর

ঐ  ক্ষত স্থান ত্রিকোণাকার একটা লোহা দিয়ে পূরণ করে দেয়। এই লোহার ত্রিকোণ আজ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। যা বর্তমানে কালের নিরিখে মহাশক্তি শালী ভৌতিক চুম্বকে পরিণত হয়েছে।

পরিশিষ্ট


যাইহোক বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর আসল রহস্য উন্মোচনের জন্য এখনো গবেষণা চলছে,এখন বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এ এর বিভিন্ন জায়গায় আধুনিক রাড্যার সিস্টেম বসানো হয়েছে।

বর্তমানে নাবিকের কম্পাস বন্ধ হয়ে গেলেও জিপিএস এর মাধ্যমে জাহাজ কে পরিচালিত করে নিয়ে যাওয়া যায় তাই আর খুব বড় একটা দুঘটনার কথা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে ঘটেনা।

তবুও বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্য কি ? এই ব্যাপারে নতুন কোনো তথ্য প্রকাশ পেলে চেষ্টা করব আপনাদিকে জানাতে। Bermuda Tringale এর ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে ০৫ ষ্টার রেটিং দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here